ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনওয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতের নাম জিহাদ হাওলাদার (২৪), পেশায় কসাই এবং বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। জিহাদ অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছিলেন এবং আনওয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার প্রায় দুই মাস আগে অভিযুক্তরা তাকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসে।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে আনারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন জিহাদ। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, জিহাদ ছাড়াও আরও চারজন বাংলাদেশি তাকে এই কাজে সাহায্য করেন। তারা প্রথমে আনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং পরে মরদেহের পরিচয় গোপন করার জন্য তার শরীরের হাড় ও মাংস আলাদা করে ফেলেন। হাড় ও মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে ট্রলি ব্যাগে ভরে সুবিধাজনক স্থানে ফেলে দেন।
এই ঘটনায় সিআইডি ইতোমধ্যে জুবের নামে আরও এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জুবেরের সঙ্গে অভিযুক্তদের একজনের সাক্ষাৎ হয়েছিল, যা নিয়ে তদন্তকারীরা জানতে চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ পুলিশও আনার হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে সিআইডির একটি দল বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন এমপি আনার। প্রথমে তিনি বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন, কিন্তু দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই বন্ধু। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সেখান থেকে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়।
সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, আনার কলকাতায় আসার অনেক আগেই অভিযুক্তরা সেখানে পৌঁছেছিলেন এবং হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। দুই অভিযুক্ত ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে ছিলেন। ১২ মে আনার কলকাতায় আসেন এবং তার আগেই ওই দুই অভিযুক্ত সেখানে অবস্থান করছিলেন। তারা হোটেল ছাড়েন আনার আসার এক দিন পরেই। গোয়েন্দাদের ধারণা, এই ১০ দিন ধরে অভিযুক্তরা শহরে থেকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন।