সারা দিন রোজা রেখে ইফতারের পরে কি করবেন?
রমজানে ইফতারের পর করণীয় ও বর্জনীয়:
রমজান মাস, ধর্মীয় অনুশীলন, ত্যাগ ও সহনশীলতার মাস। এই মাসে মুসলমানরা ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধা-তৃষ্ণা সহ্য করার পর ইফতারের সময় আসে। তবে ইফতারের পর কী করবেন, কী করবেন না, সে সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা থাকে না। এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করবো ইফতারের পর করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো নিয়ে।
ইফতারের পর করণীয়:
-
খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে যা রোজার কারণে শরীরে হারানো পুষ্টি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই ইফতারের সময় ৩-৭ টি খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা উচিত।
-
হালকা খাবার: ইফতারে হালকা খাবার খাওয়া ভালো। তেল-মশলাযুক্ত ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে যান। ফল, সবজি, খিচুড়ি, স্বাস্থ্যকর স্যুপ ইত্যাদি খেতে পারেন।
-
পানি: রোজার পর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। ইফতারের সময় অল্প অল্প করে বারবার পানি পান করুন।
-
বিশ্রাম: রোজার কারণে শরীরে দুর্বলতা আসতে পারে। ইফতারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া ভালো।
-
নামাজ: ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ আদায় করা।
আরও পড়ুন, ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি!
-
পড়াশোনা: ইফতারের পর কিছুক্ষণ পড়াশোনা করতে পারেন।
-
তারাবিহ: রমজান মাসে তারাবিহের নামাজ আদায় করা।
-
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো: ইফতারের পর পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় করা যায়।
-
দান-দান: রমজান মাসে দান-দান করার মাধ্যমে অভাবীদের সাহায্য করা।
-
দু’আ: রোজার মাসে দু’আ কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ইফতারের পর দু’আ করা উচিত।
-
শারীরিক পরিশ্রম: ইফতারের পর হালকা শারীরিক পরিশ্রম, যেমন হাঁটা, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
-
পর্যাপ্ত ঘুম: রোজার কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইফতারের পর পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
ইফতারের পর বর্জনীয়:
-
অতিরিক্ত খাওয়া: ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে হজমের সমস্যা, অম্বল, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
ঠান্ডা পানীয়: ইফতারের সময় ঠান্ডা পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন। এতে ঠান্ডা লাগার সম্ভবনা থাকে ও গলা ভেঙে যাওয়ার ।
-
ধূমপান: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। রমজান মাসে ধূমপান থেকে বিরত থাকা উচিত।
-
টিভি, মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা: ইফতারের পর কিছুক্ষণ টিভি বা মোবাইল ফোনে সময় কাটানো ঠিক আছে, তবে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করা উচিত নয়। এ সময়টুকু আল্লাহর ইবাদত ও পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য ব্যবহার করা ভালো।
-
মিথ্যা বলা, গীবত করা, পরনিন্দা করা: রমজান মাসে এইসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। এই মাসটি আত্মসংযম ও ধর্মীয় অনুশীলনের মাস।
রমজানের আধ্যাত্মিকতা:
রমজানের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। রোজা রাখার মাধ্যমে আমরা আত্মসংযম, ধৈর্য ও সহানুভূতির গুণাবলী অর্জন করি। ইফতারের পরের সময়গুলো কুরআন পাঠ, জিকর, দু’আ, দান-ধ্যানের মধ্যে কাটানো উচিত। এতে আমাদের ঈমান ও আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন, লাইসেন্স ছাড়া পাইকারি ব্যবসা করা যাবে না
শেষকথা:
রমজানের প্রতিটি মুহূর্তই মুমিনদের জন্য মুক্তির সুযোগ। ইফতারের পরের সময়গুলো কীভাবে কাটানো যায়, সে সম্পর্কে জানা থাকলে আমরা এই মাসের বরকত আরও বেশি করে লাভ করতে পারি। শুধু ক্ষুধা-তৃষ্ণা থেকে বিরত থাকাই নয়, বরং আত্মসংযম, ধর্মীয় অনুশীলন ও সৎকর্মের মাধ্যমে রমজানের সারাংশ আत्मস্থ করা উচিত।
শুভ রমজান! (Shubho Ramadan!)
আমার সকাল ২৪ পত্রিকার খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন