1. [email protected] : Amar Sokal 24 : Amar Sokal 24
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সংক্ষিপ্ত জীবনী
২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| শীতকাল| বৃহস্পতিবার| সকাল ১১:৫৯|
ব্রেকিং নিউজ:
মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন, বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন মাধবপুরে বাবার হাতে মেয়ে খুন পথচারীর অন্ডকোষ কামড়ে নিয়ে গেলো শিয়াল কাফনের কাপড় পরে শাহবাগ অবরোধে ম্যাটস শিক্ষার্থীরা বিজিবির অভিযানে ১১ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ দিনাজপুরের হাকিমপুরে “তারুণ্যের উৎসব ২৫” পালিত হয়েছে। ট্রেন থেকে পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু ঝিনাইগাতীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত সুগন্ধা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের পরিচয় মিলেছে টিকটকের প্রেমে মাদ্রাসাছাত্রী অপহরণ: ৭২ ঘণ্টা পর উদ্ধার হাকিমপুর প্রেসক্লাবের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত নলছিটি পৌরসভার হতদরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ মুন্সীগঞ্জে সচিবের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ৭ আসামি গ্রেপ্তার জগন্নাথপুরে জামায়াতের শীত বস্ত্র বিতরণ  প্রশংসায় ভাসছেন নালিতাবাড়ী থানার ওসি মোঃ সোহেল রানা ন্যাশনাল ব্যাংক রাজশাহী শাখার অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অর্থনীতিবিদের হাতে বাংলাদেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি মুন্সীগঞ্জে ডালি আম্বার্স রিসোর্টে কেন্দ্রীয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফকরুল ৫ দিনের নবজাতককে নদীতে ফেলে দিলেন মা! বগুড়ায় রাকিব হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১২

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সংক্ষিপ্ত জীবনী

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, মে ৩১, ২০২৪,
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সংক্ষিপ্ত জীবনী
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সংক্ষিপ্ত জীবনী

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন

 

জয়নুল আবেদীন (১৯১৪ – ১৯৭৬) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী ও আধুনিক বাংলাদেশের চিত্রকলার পথিকৃৎ। তার অসাধারণ শিল্পকর্ম এবং সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে তিনি বাংলা এবং বাংলাদেশে চিত্রকলার ক্ষেত্রে বিশেষ স্থান অধিকার করেছেন। এখানে তার জীবনী তুলে ধরা হলো:

 

 প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
জয়নুল আবেদীন ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জের কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল তামিজউদ্দিন আহমেদ। ছোটবেলা থেকেই তিনি চিত্রাঙ্কনে পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন।

 

কলকাতা আর্ট স্কুল

১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতা গিয়ে ভর্তি হন কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে (বর্তমানে কলকাতা আর্ট কলেজ)। ১৯৩৮ সালে তিনি এই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তার শিক্ষাজীবনে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নন্দলাল বসু ছিলেন তার অনুপ্রেরণা।

 

 শিল্পী জীবন

জয়নুল আবেদীনের জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হল ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ের কাজ। এই সময় তিনি দুর্ভিক্ষের নির্মম বাস্তবতা এবং মানুষের কষ্টকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। তার আঁকা “দুর্ভিক্ষের ছবি” সমূহ তাকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

 

 স্বাধীনতা পরবর্তী জীবন

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন। তার পরিচালনায় এই কলেজ বাংলাদেশের চিত্রকলার কেন্দ্রে পরিণত হয়।

 

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন তাঁর শিল্পকর্ম

উল্লেখযোগ্য কাজ
জয়নুল আবেদীনের উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে “দুর্ভিক্ষ”, “সাঁওতাল রমণী”, “মনপুরা ৭০”, “নৌকা”, “পল্লী জীবন”, “মা ও শিশু” ইত্যাদি।

জয়নুল আবেদিনের আঁকা ছবির নাম

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন তাঁর অসাধারণ শিল্পকর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিত্রশিল্পে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর শিল্পকর্মে গ্রামীণ বাংলার জীবনের চিত্র, দুর্ভিক্ষের নির্মমতা এবং জাতীয় আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। এখানে তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মের আলোচনা করা হলো:

১. দুর্ভিক্ষ সিরিজ (১৯৪৩)
জয়নুল আবেদীনের সবচেয়ে বিখ্যাত ও হৃদয়স্পর্শী কাজগুলোর মধ্যে “দুর্ভিক্ষ সিরিজ” অন্যতম। ১৯৪৩ সালের বাংলা দুর্ভিক্ষের সময় মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও সংগ্রামকে তিনি কাগজে ও ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এই সিরিজের ছবিগুলোতে তিনি ক্ষুধার্ত মানুষের দুরবস্থা ও বেঁচে থাকার সংগ্রাম অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চিত্রায়িত করেছেন। এই সিরিজটি তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় বহন করে।

২. নবান্ন
“নবান্ন” শিল্পকর্মটি বাংলার কৃষিজীবন ও ফসল কাটার সময়ের আনন্দমুখর পরিবেশকে কেন্দ্র করে তৈরি। এই চিত্রকর্মে গ্রামীণ বাংলার মানুষের হাসি-খুশি ও শ্রমের প্রতিফলন দেখা যায়। ফসল কাটার পর উৎসবমুখর পরিবেশে গ্রামীণ মানুষের উচ্ছ্বাস এবং প্রকৃতির সজীবতাকে জয়নুল আবেদীন অত্যন্ত জীবন্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

৩. সংগ্রাম
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সংগ্রামের চিত্র তিনি তাঁর শিল্পকর্মে অঙ্কিত করেছেন। এই চিত্রকর্মগুলোতে বাঙালির জাতীয় চেতনা, স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের দৃশ্য তুলে ধরেছেন। এইসব কাজগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

 ৪. মাটির ময়না
“মাটির ময়না” চিত্রকর্মে তিনি গ্রামের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন, তাঁদের আবেগ-অনুভূতি ও সংগ্রামকে তুলে ধরেছেন। এই কাজগুলোর মাধ্যমে জয়নুল আবেদীন বাংলার মাটির সাথে শিল্পকলার এক গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।

৫. সাঁওতাল রমণী
“সাঁওতাল রমণী” চিত্রকর্মে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের এক নারীর প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। এই চিত্রকর্মে সাঁওতাল নারীর দৈনন্দিন জীবন, তার পরিশ্রম এবং সামাজিক অবস্থানের প্রতিফলন দেখা যায়। এই চিত্রটি সামাজিক বাস্তবতাকে সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করে।

 ৬. ঝড়
“ঝড়” চিত্রকর্মে তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষের সংগ্রাম এবং প্রকৃতির ক্রোধের প্রতিফলন ফুটিয়ে তুলেছেন। ঝড়ের সময় গ্রামের মানুষের বাঁচার সংগ্রাম এবং প্রকৃতির শক্তিকে চিত্রায়িত করে তিনি অত্যন্ত জীবন্তভাবে।

জয়নুল আবেদীনের এসব শিল্পকর্ম শুধু বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি নয়, বরং তাঁর মানবিকতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং শিল্পকলার প্রতি গভীর ভালোবাসারও প্রতিফলন। তাঁর কাজগুলো যুগ যুগ ধরে বাংলার শিল্পকলা ও সংস্কৃতিতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

 

  মৃত্যু
১৯৭৬ সালের ২৮ মে ঢাকায় জয়নুল আবেদীন মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চিরকাল বাঙালি শিল্পী এবং বাঙালি চিত্রকলার একজন অগ্রদূত হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

জয়নুল আবেদীন ছিলেন এমন একজন শিল্পী যিনি চিত্রকলার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনযাত্রা, দুঃখ-কষ্ট এবং আনন্দকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। তার কাজগুলো বাংলা এবং বাংলাদেশের শিল্পকলার ইতিহাসে এক বিশাল স্থান অধিকার করে আছে।

 

 

আমার সকাল ২৪ পত্রিকার  খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ সংক্রান্ত

আমার সকাল ২৪  ই – পেপার

 © All rights reserved 2024 Amar Sokal 24
x