
জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
শ্রী মোহন চন্দ্র
যুগের পর যুগ ধরে বংশানুক্রমে জুতা সেলাইয়ের কাজ করে আসছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বারকান্দ্রীর মুচি সম্প্রদায়ের মন্টু রবিদাস। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজে জড়ালেও এখনো বাপ–দাদার ঐতিহ্যবাহী পেশায় টিকে আছেন তিনি। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে সমাজে পিছিয়ে থাকা এই মুচি পরিবারকে।
মন্টু রবিদাস জানান, প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে জুতা সেলাই করে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু এখন এই পেশা দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন,
“ঈদ-পূজার সময় কিছু কাজ হয়। তখন অল্প কিছু টাকা পাই। পরে আর তেমন কেউ আসে না। গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাজ খুঁজি। যা আয় হয়, তা দিয়ে চাল-ডাল কিনতেই শেষ হয়ে যায়। মাছ-মাংস তো অনেক দিন চোখেই দেখি না।”
তিনি আরও বলেন, জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের আশায় তারা চান না পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আসুক। কারণ এই কাজ করে সংসার চালানো যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি সমাজেও এখন তাদের সম্মানের চোখে দেখা হয় না।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রশিদা খাতুন বলেন,
“মন্টু মুচি দীর্ঘদিন ধরে জুতা সেলাইয়ের কাজ করে আসছেন। তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার জন্য অবশ্যই উদ্যোগী হওয়া দরকার। কারণ এই পেশা পুরোপুরি হারিয়ে গেলে প্রয়োজনের সময় আমাদেরই সমস্যায় পড়তে হবে।”
সব মিলিয়ে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী এই পেশায় টিকে থাকা মন্টু রবিদাসের জীবন আজ সংগ্রামের প্রতীক। প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সামাজিক স্বীকৃতি না পেলে এ পেশার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে পারে প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনও।