শাহ্ ফুজায়েল আহমদ
মফস্বল সম্পাদক :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা পানিউমদা ইউনিয়নে গ্রামের পঞ্চায়েতি পুকুর থেকে মাটি তোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন একই পরিবারের চারজন। আহতরা বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ এপ্রিল হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের শংকর পুরের গ্রামস্থ ফুটবল খেলার মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে।
এ ঘটনায় মৃত শ্রীদাম সরকারের পুত্র দিপন সরকার বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, প্রদীপ সরকারের পুত্র প্রসেন সরকার (২৮), প্রশিক্ষন সরকার (২৬), প্রদীপ সরকার, পিতা- অজ্ঞাত, শুধাংশু সরকারের পুত্র সুভাস সরকার (৩৪), মৃত সুবোধ সরকারের পুত্র গৌরমন সরকার (৩৫), রতন সরকার, জগত সরকারের পুত্র সুধন সরকার (৩৫), নিবাস সরকারের পুত্র চন্ডী সরকার ( ৪৫ )
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, শংকরপুর গ্রামে একটি পঞ্চায়েতি পুকুর রয়েছে। দিপন সরকার ও অন্যান্য লোকজন ঐ পুকুরে থেকে মাটি কেটে গ্রামের শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ মন্দিরে আঙ্গিনাসহ আশপাশ ভরাট করে দেন। পঞ্চায়েত পুকুরের অবশিষ্ট মাটি বিক্রি করে টাকা দিপন সরকারসহ অন্যান্যদের মজুরী হিসাবে নেওয়ার জন্য অনুমতি দেন। সেই অনুযায়ী বিপলু চক্রবর্তী, রাধামন সরকার, নিপন সরকার, নারায়ন সরকার, সুমিত্রাস সরকারগণ উক্ত হতে মাটি কেটে বিক্রি করে মুজুরীর টাকা নিতে চাইলে বিবাদীরা দিপন সরকারকে মাটি কেটে বিক্রি করতে নিষেধ করে।
বিষয়টি গ্রামের পঞ্চায়েতের লোকজনকে জানাইলে তারা দিপন সরকার ও বিবাদীদের বিষয়টি মীমাংসা করে দিবেন এমন আশ্বস্ত করেন এবং পঞ্চায়েতের মুরুব্বি আবু সরকারের বাড়ীতে ২৫ এপ্রিল রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় বৈঠকের দিন তারিখ নির্ধারন করা হয়। ঘটনার পূর্বে দিপন সরকার ও তার ভাইয়েরা আবু সরকারের বাড়ীতে পঞ্চায়েতে উপস্থিত হওয়ার জন্য রওয়ানা করে। রাত সাড়ে আটটার সময় শংকরপুর গ্রামস্থ ফুটবল খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে খালি জায়গায় পৌছলে তাদেরকে তাদের মারধরসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আহত করা হয়।
মামলার বাদী দিপন সরকার বলেন, আমাদের প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। প্রসেন সরকার তার হাতে থাকা পাইপ দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথার ডান পাশে গুরুতর জখম করে। মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়। রতন সরকার লাঠি দিয়ে ডান পিঠে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।
গৌরমন সরকারের হাতে থাকা পাইপ দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে তার ভাই রাখাল সরকারের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। রাখাল সরকারের মাথায় ৭টি সেলাই
দেওয়া হয়।
বিবাদী রতন সরকারের হাতে থাকা রুল দিয়ে উক্ত তার ডান হাতের কনুইয়ের উপরে ও কাধের পেছনে আঘাত করে।
প্রশিক্ষণ সরকারের হাতে থাকা রুল দিয়ে রাধামন সরকারের মাথায় আঘাত করে। যাহাতে ৬টি সেলাই দেওয়া হয়।
সে তার ডান হাতের কব্জির উপরে আঘাত করে। সুভাস সরকারের হাতে থাকা দা দিয়ে দিলিপ সরকারকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে। তার মাথায়
৮টি সেলাই দেওয়া হয়।
সে দিলীপ সরকারের মাথা লক্ষ করে কোপ মারলে ডান হাত দিয়ে ফেরাতে চাইলে হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে রক্তাক্ত জখম হয়।
বিবাদী প্রদীপ সরকার, সুধন সরকার, চন্ডী সরকার গং লোহার রড ও লাঠি দ্বারা এলোপাতারি ভাবে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আমাদেরকে প্রাণে হত্যা করবে বলে হুমকি প্রদর্শণ করে। আমাদের সূর চিৎকার শুনে সাক্ষীগণ ও পাড়া প্রতিবেশীরা ঘটনা দেখেন এবং আমাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে
নিয়ে যান।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি দুঃখজনক। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।