ফরিদপুরের ভাঙ্গায় টিকটক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে জুট মিলের এক নারী শ্রমিককে ধর্ষণ এবং তার অশ্লীল ভিডিও ধারণের অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (৫ জানুয়ারি) ওই নারীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং অভিযুক্তদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
ভুক্তভোগী ১৯ বছর বয়সী এই নারী একজন জুট মিল শ্রমিক। তার ৪ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চুমুরদী গ্রামের আকরাম খাঁন তাকে টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে অর্থের লোভ দেখিয়ে ডেকে নেয়। পরে একটি ঘরে আটকে রেখে আকরাম এবং তার সহযোগী জুয়েল তাকে ধর্ষণ করে।
স্থানীয় যুবকরা বিষয়টি জানতে পেরে ৩ জানুয়ারি রাতে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে এবং বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। ইউপি সদস্যের ছেলে সাইদুল মোল্লাসহ আরও কয়েকজন অভিযুক্ত তার কাছে চাঁদা দাবি করে।
পুলিশি অভিযান ও গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভাঙ্গা থানার পুলিশ শনিবার অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে আকরাম খাঁন (২৫), জুয়েল মোল্লা (২৫), সাইদুল মোল্লা (৩০), মামুন শরীফ (৩২), বাবু মোল্লা (৩০), এবং মধুখালী উপজেলার জুয়েল মোল্লা (৩০) রয়েছেন। অভিযুক্তদের মোবাইল থেকে অশ্লীল ভিডিওর ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য
ওই নারী জানান, আকরামের সঙ্গে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। আকরাম তাকে টিকটক বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয় যুবকেরা তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি করে।
আরেক ভুক্তভোগী সুজন মোল্লা জানান, আকরামের কাছ থেকে মোবাইল সমস্যার সমাধান নিতে গেলে তাকেও মারধর করে ভিডিও ধারণ করা হয় এবং অর্থ দাবি করা হয়।
পুলিশের বক্তব্য
ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান জানান, ধর্ষণের অভিযোগে দুই জন এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ভুক্তভোগী নারীর ন্যায়বিচারের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।