নিত্যানন্দ হালদার
পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার একেবারে উত্তর সীমান্তে অবস্থিত দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের বিল ডুমুরিয়া, পদ্মডুবি, দাসপাড়া, সোনাপুর, মনোহরপুর ও উত্তর গাওখালী—এই বিস্তৃত এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে মাইলের পর মাইল জলাভূমি। এই বিলাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা কচুরিপানাই এখানকার হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।
প্রায় দুই হাজারেরও বেশি পরিবার প্রত্যক্ষভাবে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। কচুরিপানা সংগ্রহ এখানকার নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে এক সহজলভ্য আয়ের উৎস হিসেবে বিবেচিত। ভোর হলেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নারী-পুরুষ, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও নামমাত্র খরচে কচুরিপানা সংগ্রহে বেরিয়ে পড়েন। পড়াশোনার খরচ মেটাতে অনেক শিক্ষার্থীও এই কাজে যুক্ত। গৃহবধূরাও পিছিয়ে নেই—বছরের প্রায় প্রতিটি মাসেই চলে কচুরিপানা সংগ্রহ, তবে ভাদ্র থেকে জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত থাকে এর ভরা মৌসুম।
সংগ্রহের পর কচুরিপানা শুকাতে প্রায় ৪-৫ দিন সময় লাগে। এরপর স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি শুকনো কচুরিপানা প্রায় ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এসব কচুরিপানা থেকে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন পাপোশ, ফুলদানি, ঝুড়িসহ নানা ধরনের হস্তশিল্প।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এ শিল্পের যথাযথ উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হলে এলাকার হাজারো মানুষের আয় আরও বাড়বে, আর নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।