মাঠকর্মীর বাড়ির সামনে গ্রাহকদের বিক্ষোভ
নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: মোঃ মুনির হোসেন
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় ‘আলোক শিখা’ নামের একটি এনজিওর বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এনজিওটির পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ দেড় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের।
শনিবার সকালে উপজেলার শর্ষিনা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা এনজিওর মাঠকর্মী শারমিন আক্তারের বাড়ির সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন বানারীপাড়া উপজেলার ব্রাহ্মণকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে সনদ নিয়ে ২৩টি শাখা খুলে সমিতির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে নেছারাবাদ উপজেলায় তিনটি শাখা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব শাখা থেকেই প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ রেহানা পারভীন জানান, “আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থ থেকে ১০ লাখ টাকা ‘আলোক শিখা’তে জমা করি। এখন পরিচালক পালিয়ে গেছেন, মাঠকর্মীও কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না।”
বিধবা বিলকিস বলেন, “মানুষের বাসায় কাজ করে সঞ্চিত চার লাখ টাকা আমি জমা দিয়েছিলাম ভবিষ্যতের জন্য। এখন সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম।”
হ্যাপী বেগম জানান, সেলাই কাজ করে জমা রাখা ৬ লাখ টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি চরম দুর্ভোগে আছেন।
মাগুরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আলতাফ হোসেন বলেন, “আমার স্ত্রীও ওই সমিতিতে টাকা রেখেছেন। দেলোয়ার স্থানীয় মাঠকর্মীদের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন।”
নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি জানান, ‘আলোক শিখা’ এনজিওটি সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর ও জয়েন্ট স্টক থেকে সনদপ্রাপ্ত হলেও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) থেকে অনুমোদন নেয়নি। তাই তাদের ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”