কামাল হাছান, নলছিটি
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিদিন গড়ে ৭০০ রোগী ভর্তি হয় এখানে। ইনডোরে প্রায় তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, আর আউটডোরে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসাপত্র গ্রহণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে থাকেন। দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলার অভিযোগ কাটিয়ে ধীরে ধীরে শৃঙ্খলার দিকে ফিরছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি সেনাবাহিনী থেকে পরিচালক পদায়নের পর হাসপাতালের নানা পদক্ষেপ সাফল্যের মুখ দেখছে। এসব উদ্যোগে সহযোগিতা করছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)।
নতুন উদ্যোগ ও পরিবর্তন
হাসপাতাল অভ্যন্তরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সামনের গেট ও খোলা জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। চিকিৎসকদের রাউন্ড বাড়ানো, নার্সিং সেবার মান বৃদ্ধি এবং ল্যাবরেটরি কার্যক্রম সচল করার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে।
হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীরের প্রচেষ্টায় নতুন করে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, এক্স-রে মেশিন, মাইক্রোস্কোপসহ বিভিন্ন আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে। শিগগিরই নিউরো ও স্পাইনাল সার্জারি অপারেশন শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চোখের ফ্যাকো সার্জারি মেশিন চালু করে সফলভাবে অপারেশন করা হচ্ছে।
এছাড়া হাসপাতালের নিরাপত্তা ও ইনফেকশন প্রতিরোধে ডিজিটাল ভিজিটর কার্ড পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ উন্নত করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
এই উন্নয়নের প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধীরে হলেও হাসপাতালটি বরিশালবাসীর প্রত্যাশা পূরণের পথে এগিয়ে চলেছে। তারা আশা করছেন, পরিচালকের অন্যান্য পরিকল্পনাগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, মেডিসিন ভবনের অন্ধকার ও টয়লেট সমস্যা সমাধানে ব্যাপক কাজ করা হয়েছে। চিকিৎসক, সেবিকা ও রোগীদের জন্য পৃথক টয়লেট নির্মাণ এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন জানালার ব্যবস্থা করে আলোর অভাব দূর করা হয়েছে।
পরিচালকের বক্তব্য
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, “আমি প্রথমে সবকিছু বুঝতে কিছুটা সময় নিয়েছি। আমি চাই টেকসই ও স্থায়ী উন্নয়ন করতে। ইতোমধ্যে অনেক কাজ হয়েছে এবং আরও অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”