মোঃ দুলাল সরকার
স্টাফ রিপোর্টার
মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া উপজেলা তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। তবে নিহতের গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার স্বজনরা। শুক্রবার (১০ জানুযারি) সকালে গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। মাহমুদা আড়ালিয়া গ্রামের ইমরানের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে মাহমুদার সাথে একই ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে ইমরানের বিয়ে হয়। নয় বছরের সংসার জীবনে তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। মাহমুদার স্বামী ইমরান সৌদিআরব প্রবাসী, প্রায় এক মাসে আগে সে ছুটিতে বাড়িতে আসে।
প্রতিবেশী কয়েকজন জানায়, পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হতো। সর্বশেষ শুক্রবার (১০ জানুযারি) সকালে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া এবং মাছ কাটা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর বসত ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে মাহমুদাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের মা মর্জিনা বেগম বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আমার মেয়ে জামাই আমাকে কল দেয়। মুঠোফোন আমাকে লাইনে রেখে সে আমার মেয়েকে মারধর করতে থাকে। সকাল দশটার দিকে দিকে আমার মেয়েকে দ্বিতীয় দফা মারধর করা হয়। আমার ধারণা এ সময়ই সে মারা যায়। বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে তার লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলানো হয়েছে। ঘটনার পর মেয়ে জামাই ও তার বড়ভাই কৌশলে পালিয়ে যায়। আমার মেয়েকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে তাদের পালিয়ে যাওয়া প্রমাণ করে তারা আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।
নিহতের ভাসুর ওয়াসিম বলেন, মেয়েটির রাগ অনেক বেশি ছিল। আমার ছোট ভাই সেটা মেনে নিয়ে সংসার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। আজ সকালে ঘরের দরজা বন্ধ করে সে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে পরে আমরা তাকে উদ্ধার করি। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর সে আবারও ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর জানালা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পাই আমরা।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ বর্তমানে গজারিয়া থানায় রয়েছে। নিহতের গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।