
খুলনা
খুলনা নদীবন্দর ভাঙা ঘাট, নাব্য সংকট এবং আধুনিক অবকাঠামোর অভাবের কারণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। ফলে গত দুই বছরে বন্দরে পণ্য খালাস প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। এতে রাজস্ব হ্রাসের পাশাপাশি ঘাট এলাকার শ্রমিকদের জীবনযাত্রাও প্রভাবিত হয়েছে।
খুলনার ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত এই বন্দরে মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে সার, চাল, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আনা হয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। তবে একাধিক ঘাট ভাঙনের কারণে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে না।
খুলনা অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মালিক গ্রুপের কোষাধ্যক্ষ ওসমান গনি জানান, “দুই বছর আগে বন্দরে শতাধিক জাহাজ পণ্য খালাস করত। এখন সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে। ব্যবসায়ীরা বিকল্প পথ খুঁজছেন।”
জাহাজ কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমিকরা। হামিদুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, “আগে প্রতিদিন কাজ থাকত। এখন সপ্তাহে দুই-তিনদিন কাজ মিললে ভাগ্য ভালো। সংসার চালানো কষ্টের হয়ে গেছে।”
বন্দর ব্যবহারকারীরা মনে করছেন, ঘাট সংস্কার, নাব্য পুনরুদ্ধার এবং আধুনিক অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়া খুলনা নদীবন্দর কার্যক্রম স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। খুলনা অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মো. মফিজুর রহমান বলেন, “গত পাঁচ বছরে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। শুধু আশ্বাস ও পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে। দ্রুত উদ্যোগ না নিলে নদীকেন্দ্রিক বাণিজ্য আরও বড় সংকটে পড়বে।”
খুলনা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মোহা. মাসুদ পারভেজ জানান, “ঘাট সংস্কার ও নাব্য সংকট নিরসনের জন্য পরিকল্পনা রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং প্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হবে।”
১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত খুলনা নদীবন্দরটি ১৪৩ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত।