
মোঃ সোলায়মান গনি, স্টাফ রিপোর্টার | কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদপ্রার্থী ডা. আক্কাস আলীকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তার অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, একাধিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং বিতর্কিত নির্বাচনে অংশগ্রহণ নতুন করে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডা. আক্কাস আলীর রাজনৈতিক অতীত ভোটারদের মধ্যে আস্থাহীনতা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করার কথাও বলা হচ্ছে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া ২০১৮ সালের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণকে সমালোচকরা সুবিধাবাদী রাজনীতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। ২০২৪ সালের তথাকথিত “ডামি নির্বাচন”-এ ফ্যাসিবাদী শক্তির সহযোগী হিসেবে অংশগ্রহণের কারণে তাকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল—যা তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলোর অভিযোগ, ডা. আক্কাস আলী সরাসরি ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগকে পুনঃবাস (পুনর্বাসন) করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত। সমালোচকেরা দাবি করছেন, বিরোধী কণ্ঠকে দুর্বল করতে এবং পুরোনো ক্ষমতাসীন বলয়কে নতুন রূপে উপস্থাপন করতেই এই কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে—এই পুনঃবাস প্রক্রিয়াকে আড়াল করতে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ ছড়িয়ে মিডিয়ায় প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে।
তবে ডা. আক্কাস আলীর সমর্থকরা দাবি করছেন, তিনি বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে তাকে ঘিরে সমর্থন ও বিরোধ—উভয়ই স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে।
ডা. আক্কাস আলীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, বিতর্ক ততই তীব্র রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দেবে।