
বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ আসাদুজ্জামান
শীতের আগমনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন পরিণত হয়েছে অতিথি পাখিদের স্বর্গভূমিতে। ভোরের প্রথম আলো ফুঁটে উঠতেই ক্যাম্পাসের লেকগুলো মুখর হয়ে ওঠে হাজারো পাখির কলতান ও ডানার ঝাপটায়। সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল এবং হিমালয় ঘেঁষা অঞ্চল থেকে হাজার মাইল দূর পাড়ি দিয়ে পরিযায়ী পাখিরা প্রতিবছর শীতেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে জাহাঙ্গীরনগরের জলাশয়ে আশ্রয় নেয়।
লাল শাপলা, পদ্মফুল আর স্বচ্ছ পানির ভেতর অতিথি পাখিদের জলকেলি, ডুবসাঁতার ও খুনসুটি—সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় অপূর্ব এক প্রাকৃতিক দৃশ্য। এখানে আগত পাখিদের মধ্যে পাতি সরালি, রাজ সরালি, ছোট পানকৌড়ি, শামুকখোল, জলপিপি, ধলাবুক ডাহুক, পাতি পানমুরগি, পচার্ড, গার্গেনি ও মানিকজোড় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পেছনের লেক, পরিবহন চত্বরসংলগ্ন জলাশয় এবং ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টারের ভেতরের লেকগুলোতেই দেখা যায় সবচেয়ে বেশি পাখির আনাগোনা। এসব দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমী।
পাখি সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী ‘পাখি মেলা’ আয়োজন করে থাকে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, শব্দদূষণ ও দর্শনার্থীদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাখির সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবুও শীতের জাহাঙ্গীরনগর এখনো দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য অভয়ারণ্য হিসেবে সবার কাছে জনপ্রিয়।