নিউজ ডেক্স আমার সকাল ২৪
পবিত্র কোরআনে পুরুষদের নামে কোনো সুরা নেই, তবে নারীদের নামে একটি সুরা রয়েছে—সেটি হলো চতুর্থ সুরা ‘নিসা’। ‘নিসা’ শব্দের অর্থ স্ত্রীজাতি বা নারী। এই সুরায় রয়েছে ২৪টি রুকু এবং ১৭৬টি আয়াত। এটি তৃতীয় হিজরিতে, ওহুদের যুদ্ধের পর অবতীর্ণ হয়।
নারীদের অধিকার, বিবাহ, পারিবারিক জীবন ও সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আলোচনা থাকায় এর নামকরণ হয়েছে সুরা নিসা।
ইসলামের আগের যুগে একজন পুরুষ পাঁচ থেকে দশজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখতেন।
এ সুরায় আল্লাহ তাআলা সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছেন।
তবে শর্ত হলো—ন্যায়বিচার করা ও ভরণপোষণের সক্ষমতা থাকা আবশ্যক; তা না পারলে একজনেই সীমাবদ্ধ থাকার নির্দেশ।
স্ত্রীকে মোহর প্রদান করা ফরজ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিয়ের আগে মোহর নির্ধারণ করতে হবে, তবে স্ত্রীর সম্মতিতে পরেও দেওয়া যেতে পারে।
নারী ও পুরুষ উভয়েরই উত্তরাধিকারের অধিকার রয়েছে।
সম্পদ বণ্টনের সময় নারীদের উপস্থিতিতে বিরক্তি প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
যারা যুদ্ধ করতে পারে না—এ যুক্তিতে নারী ও শিশুদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার প্রথা ইসলাম স্পষ্টভাবে নাকচ করেছে।
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও মোহরানা—সব ধরনের দায়িত্ব পুরুষের ওপর অর্পিত।
নারীদের সম্মান ও সদাচরণ বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুরা নিসায় উল্লেখ আছে—রক্ত-সম্পর্ক, বৈবাহিক সম্পর্ক ও দুধ (রোজা) সম্পর্কের কারণে যেসব নারীর সঙ্গে বিবাহ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এতিমদের সম্পদ হরণ, কষ্ট দেওয়া বা অনিয়মে ভোগানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নারীদের মতোই শিশুদেরও সম্পদের অংশ সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত হয়েছে।
সুরা নিসা হলো নারী, পরিবার, উত্তরাধিকার, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত ইসলামের এক পূর্ণাঙ্গ সুরা। এটি নারীর সম্মান, নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সমাজের দুর্বল শ্রেণির অধিকার সংরক্ষণের এক অনবদ্য দলিল।