কামাল হাছান, নলছিটি।
বরিশালে ৫ দিনের এক নবজাতককে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে এ ঘটনার পর থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রথমে বিষয়টি গোপন থাকলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়লে পুরো নগরীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতার অজুহাত দেখিয়ে ঐশি আক্তারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ভর্তি রেজিস্ট্রারে তার নাম কৌশলে রাবেয়া হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে ঐ নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জানা গেছে, ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি কুলকাঠি ইউনিয়নের হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার স্বামী মোঃ সোহেল আহমেদ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত।
মোঃ সোহেল আহমেদ 'আমার সকাল ২৪'-কে জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে তার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। দুইদিন পর তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে আসেন। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন তার স্ত্রী। এরপর তিনি অটোরিকশাযোগে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে শিশুটির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তিনি তার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
শেবাচিম হাসপাতালের নার্সরা জানান, শুক্রবার এই হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু বুধবার বিকেলে ঐশি আক্তারকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও শিশুটিকে সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পারেন, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশও এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছে।
এদিকে, আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৮টার দিকে মোঃ সোহেল আহমেদ জানান, তার স্ত্রী শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও সেখান থেকে পালিয়ে গেছেন।