
শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। একই সঙ্গে খুনিদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে সরকার পতনের আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চ ও জুলাই মঞ্চের নেতারা।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে ‘শহীদ হাদি চত্বর’-এ সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের অভিযোগ করেন, হাদি হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগেই এই হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এফবিআইকে যুক্ত করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শহীদ ওসমান হাদি হত্যার মূল অভিযুক্ত দুইজন এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এমনকি তাদের অবস্থানও শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই মঞ্চের নেতারা অভিযোগ করেন, খুনিদের ময়মনসিংহে অবস্থানের তথ্য সরকারকে দেওয়া হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। তারা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাঠামোগত সংস্কারের দাবি জানান এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগকালে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পরদিন শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে শহীদ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। পরে বিশেষ নিরাপত্তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে গিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে দাফন করা হয়।