
স্টাফ রিপোর্টার | সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে ইজারার নাম করে নৌ-শ্রমিকদের ওপর চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও নির্যাতন। সরকারি নির্ধারিত ফি উপেক্ষা করে এক শ্রেণির চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। প্রতিবাদ করলেই শ্রমিকদের ওপর নেমে আসছে অকথ্য জুলুম-নির্যাতন।
শ্রমিকদের অভিযোগ—জামালগঞ্জ উপজেলার রক্তি নদী ও রয়্যালটি ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র নাম ব্যবহার করে চলছে অবৈধ চাঁদাবাজি।
সরকারি রেট অনুযায়ী প্রতিফুটে কর মাত্র ২৫ পয়সা, কিন্তু সেখানে চাঁদাবাজরা আদায় করছে ফুটে ২ টাকা।
শ্রমিকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মারধর, হুমকি ও নৌকা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাধা দিলেই হামলায় রক্তাক্ত জখমও হতে হচ্ছে।
সম্প্রতি ফাজিলপুর থেকে বালু নিয়ে রক্তি নদী অতিক্রম করছিল এক বালুবাহী নৌকার মাঝি। দুর্লভপুর রক্তি নদীর টোল ঘাটে কিছু যুবক বিআইডব্লিউটিএ’র নামে চাঁদা দাবি করে। মাঝি ৪০০ টাকা দিলে তারা তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ৫ হাজার ফুট বালুর জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না চাইলে তাকে লাঠি ও কিল-ঘুষি মেরে আহত করা হয়। প্রাণের ভয়ে শেষে মাঝি বাধ্য হয়ে দাবি করা টাকা পরিশোধ করেন।
সুনামগঞ্জের নৌ-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বলেন, বছরজুড়ে নদীপথে শ্রমিক নির্যাতন চললেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না থাকায় চাঁদাবাজেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তারা অবিলম্বে নৌপথে চাঁদাবাজি, টোল সন্ত্রাস ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান। অন্যথায় তারা রাজপথে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় দুর্লভপুর একতা স্টিল বডি নৌকা মালিক সমিতি জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন, দ্রুত বড় পরিসরে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শ্রমিক নেতাদের দৃঢ় প্রত্যয়—
“শ্রমিকদের আর্তনাদ আর সহ্য করা হবে না।”