সাতক্ষীরার উপকূলে লবণসহিষ্ণু ধানে বাম্পার ফলন
নিউজ রিপোর্ট মুনসুর হেলাল স্টাফ রিপোর্টার
সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগরে লবণাক্ত জমিতে আবারও কৃষির স্বপ্ন জেগে উঠেছে। বহু বছর ধরে লবণাক্ততার কারণে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাওয়া বিশাল এলাকাজুড়ে এবার বাম্পার ফলন দিয়েছে লবণসহিষ্ণু ‘সোনার ধান’। ফলে নতুন আশা দেখছেন উপকূলের কৃষকরা।
শ্যামনগরের গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী ও পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে এবার ব্রি ধান-৬৭, ব্রি ধান-৮৪ ও ব্রি ধান-৯২ জাতের ধান ভালো ফলন দিয়েছে। কৃষকরা জানান, আগে যেখানে এক বিঘা জমি থেকেও ধান তোলা যেত না, এবার সেখানে প্রতি বিঘায় ১৮–২০ মণ ধান পাওয়া যাচ্ছে।
গাবুরার কৃষক আব্দুল গনি বলেন,
“ঘূর্ণিঝড় আইলা আর লবণাক্ততার কারণে কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়েছিলাম। নতুন উন্নত জাতের বীজ পেয়ে আবার চাষ শুরু করি। এ বছরের ফলন দেখে চোখে পানি এসে গেছে।”
কৈখালীর কৃষক শামসুর রহমানও জানান,
“আগে লবণাক্ততার কারণে জমিতে ঘাসও হতো না। এখন সেই জমিতেই সোনালি ধান দুলছে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার লবণসহিষ্ণু জাতের ধান চাষে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ। এরই ফলে উপকূলে এবার ধানের ব্যাপক সাফল্য এসেছে।
তিনি আরও জানান,
“এই ধারা বজায় থাকলে উপকূলীয় অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
ভালো ফলনের কারণে কৃষকদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে, তেমনি এলাকাজুড়ে ফিরছে অর্থনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য। বাজারগুলোতেও নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লবণসহিষ্ণু ধানের এ সাফল্য উপকূলের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও লবণাক্ততার সঙ্গে লড়াই করা মানুষের জীবনে এ ধান যেন নতুন আশার আলো। শ্যামনগরের কৃষকরা প্রমাণ করেছেন—লবণাক্ত মাটিতেও সোনার ফসল ফলানো সম্ভব।













