মোঃ শাকিল আহামাদ, জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী
রাজশাহীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে শাহমুখদুম থানার ওসি মাছুমা মুস্তারী ও প্রতারক আক্তারুল ইসলামের যোগসাজশে ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ২৬ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) শাখায় জমি নিলামকে কেন্দ্র করে। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রতারক আক্তারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি সাংবাদিকের মোবাইল ভেঙে দেন এবং অশালীন গালাগালি করেন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
সাংবাদিকরা অভিযোগ করতে চাইলে থানার ওসি মামলা না নিয়ে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশের জেরে উল্টো প্রতারক আক্তারের পক্ষ নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর (মামলা নং-২/২০২৫) ছয় সাংবাদিক ও এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়।
আক্তার অভিযোগ করেছেন, সাংবাদিকরা তার কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। তবে ঘটনার ভিডিও প্রমাণস্বরূপ সবার কাছে রয়েছে, যা পুলিশও দেখেছে। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, এটি আসলে ওসি মাছুমা মুস্তারীর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ ঠেকাতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা।
সাংবাদিক সমাজের প্রতিক্রিয়া
রাজশাহীর সাংবাদিকরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে পুলিশ ভয় সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, এটি শুধু সাংবাদিকদের নয়, গণতান্ত্রিক সমাজকেও হুমকির মুখে ফেলছে। তারা বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আইন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মামলা গণমাধ্যমকর্মী সুরক্ষা আইন ও সংবিধানে থাকা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করেছে। এর ফলে গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
আরএমপি কমিশনার আবু সুফিয়ান বলেন,
“সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলার তদন্ত চলছে। কেউ নির্দোষ হলে তদন্ত শেষে নাম বাদ দেওয়া হবে।”