শাহ্ ফুজায়েল আহমদ
মফস্বল সম্পাদকঃ
সম্পত্তি দখল, হামলা, লুটপাট, চুরি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসী রসুলপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবুল হোসেনের পক্ষের কেয়ারটেকার মোঃ পিয়ার আলী। শুক্রবার জগন্নাথপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে একাধিক ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করেন।
আজ ১৮ মে রবিবার জগন্নাথপুর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে পিয়ার আলী লিখিত বক্তব্যে জানান, ইংল্যান্ড প্রবাসী মোহাম্মদ আবুল হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে রেখে যাওয়া বসতভিটা ও সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব তার নিকটাত্মীয় ও কেয়ারটেকার মোঃ পিয়ার আলীকে অর্পণ করেন। প্রবাসে অবস্থানের সুযোগ নিয়ে আবুল হোসেনেরই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়—ভাতিজা ও ভাতিজিরা—জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল ও হামলার পথ বেছে নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পিয়ার আলী জানান, তার দাদা আবুল হোসেন নিজ খরচে ভাতিজা-ভাতিজিদের জন্য আদাপাঁকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন, দুইটি সিএনজি গাড়ি কিনে দিয়েছেন এবং ভাতিজিকে নিজ খরচে বিবাহ দেন এবং ভাতিজির স্বামীকে একটি নোহা গাড়িও কিনে দেন। অথচ সেই ভাতিজা-ভাতিজিরাই এখন তার নির্মিত বিল্ডিং দখলের চেষ্টায় লিপ্ত।
তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে উক্ত সম্পত্তির আনুষ্ঠানিকভাবে ভাগবাটোয়ারা সম্পন্ন হয়। উক্ত বণ্টন অনুযায়ী মোহাম্মদ আবুল হোসেন ও তার ভাই মকবুল হোসেন উভয়ে ২৩.৫ শতাংশ করে জমি পান, বাকি ২৩ শতাংশ জমির মালিক হন আবাব মিয়া। বিষয়টি মীমাংসিত থাকার পরও বর্তমান বিবাদীরা তা উপেক্ষা করে বাড়ি দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
তিনি একাধিক হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেন—
প্রথম হামলাটি ঘটে গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ বিকাল সাড়ে তিনটায়, যখন দেশীয় অস্ত্রসহ বিবাদীরা তার দাদার বাড়ির উঠানে প্রবেশ করে তাকে মারধর করে, ঘর ভাঙচুর করে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গত এপ্রিল মাসে, আবুল হোসেন দেশে ফিরে বাড়িতে ঢুকতে গেলে বিবাদীরা বাধা প্রদান করে এবং বিল্ডিংয়ের তিনটি রুম দখল করে নেয়। এ সময় তারা প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে বলে অভিযোগ করা হয়।
তৃতীয় ও সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গত ৬ মে ২০২৫ খ্রিঃ রাত ৩টা ২০ মিনিটে। ঘুমন্ত অবস্থায় আবুল হোসেন ও তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। দাদীর গলা থেকে স্বর্ণালংকার এবং আলমারি ভেঙ্গে নগদ অর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র লুট করে নেয়া হয়। চুরি যাওয়া মালামালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা বলে দাবি করা হয়।
বিবাদীরা হলেন:
১. মোঃ জসিম হোসেন,
২. মোঃ জয়নাল হোসেন,
৩. রিনা বেগম পরী,
৪. মোঃ আব্দুল আলী,
৫. নাজমা বেগম,
৬. নাজমিন বেগম এবং
৭. জেসমিন বেগম।
পিয়ার আলী আরও জানান, তিনি প্রায়ই বাড়িতে গেলে বিবাদীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও হেনস্তা করে।
তিনি প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান, যেন এই ভূমিদস্যু ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভুক্তভোগী পরিবারটির জানমাল, সম্মান ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।