
মোঃ বিল্লাল হোসেন
ক্রাইম রিপোর্টার, যশোর
আমার সকাল ২৪
লিবিয়ায় আবারও মাফিয়া চক্রের গুলিতে প্রাণ হারালেন তিন বাংলাদেশি যুবক। অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় গুলি করলে নিহত হন মাদারীপুরের ইমরান, মুন্না ও বায়েজিত। তাদের মৃত্যুতে পরিবার-পরিজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।
স্বজনদের বরাতে জানা যায়, ইতালিতে পৌঁছে ভালোভাবে থাকার আশায় গত ৮ অক্টোবর বাড়ি ছাড়েন মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের আদিত্যপুর গ্রামের হাজী মো. তৈয়ব আলী খানের ছেলে ইমরান খান। প্রতিবেশী ও মানবপাচার চক্রের সদস্য শিপন খানের মাধ্যমে ২২ লাখ টাকায় তাকে ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়।
কিন্তু লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর ইমরানকে আটকে নির্যাতন করে তার পরিবার থেকে আরও ১৮ লাখ টাকা আদায় করে দালাল চক্র। পরবর্তীতে ১ নভেম্বর ভুমি্ধসাগর পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে নৌযানে ওঠার পর মাফিয়া চক্রের গুলিতে নিহত হন ইমরান। মঙ্গলবার তার মৃত্যুর খবর দেশে পৌঁছালে পরিবারে শুরু হয় কান্না আর শোকের মাতম।
একই দিনে একইভাবে মাফিয়ার গুলিতে নিহত হন রাজৈর উপজেলার দুর্গাবদ্দী গ্রামের ইমারাত তালুকদারের ছেলে মুন্না তালুকদার এবং ঘোষলাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস শেখের ছেলে বায়েজিত শেখ। তিন যুবকের মরদেহ সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার।
ঘটনা প্রকাশের পর দালাল শিপনের পরিবারের সদস্যরা ঘরে তালা ঝুলিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তবে শিপনের স্বজনরা দাবি করেছেন, তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন এবং জোর করে কাউকে বিদেশে পাঠাননি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ—দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় অবস্থান করে যুবকদের ইতালিতে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে আসছে শিপন। এর আগেও একই ধরনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এখনও আইনের আওতায় আসেনি সে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “লিবিয়ায় গুলিতে তিন যুবকের মৃত্যুর খবর আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। নিহতদের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দালালদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিন যুবকের অকাল মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোক।