রাজশাহী প্রতিনিধি:
মোঃ শাকিল আহামাদ
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সংস্কার কাজে ২১ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে নগর ভবনের প্রকৌশল শাখায় অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ সিদ্দীক এবং উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নগর ভবনে তাণ্ডব চালানো হয়, যা ২১ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। এই ক্ষতি পূরণের জন্য শুরু হওয়া সংস্কার কাজগুলোতে নিয়ম-নীতির অনুসরণ না করার অভিযোগে দুদক অভিযান চালায়।
দুদক জানিয়েছে, রাসিকের বেশিরভাগ সংস্কার কাজের ঠিকাদার নির্বাচনের সঠিক কাগজপত্র দেখানো সম্ভব হয়নি। যেসব কাগজ দেখানো হয়েছে, সেগুলো যাচাই করার সময় ঠিকাদারের মোবাইল নম্বর ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। নম্বরটি চাঁদপুরের এক ব্যক্তির, যিনি কোনো ঠিকাদার নন।
জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও নগরের দড়িখড়বোনা এলাকার বিএনপি নেতা ইয়াহিয়া খান মিলু বেশিরভাগ কাজের দায়িত্বে রয়েছেন। ইতোমধ্যে নগর ভবনের রং করার কাজ শেষ হয়েছে, নতুন গ্লাস লাগানো হয়েছে এবং মেয়রের দপ্তর সংস্কারের জন্য ৫০ লাখ টাকার কাজ চলছে। তবে এসব কাজের কোনো টেন্ডার হয়নি এবং “কোটেশন মেথড” অনুসরণের দাবি করা হলেও কাগজপত্র সঠিক নয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, “আমরা ফরিদা ইয়াসিমন, মাইসা এন্টারপ্রাইজ এবং শাহরিন এন্টারপ্রাইজ নামের তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাগজ পেয়েছি। মাইসা এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়াহিয়া খান মিলু। শাহরিন এন্টারপ্রাইজের মালিক হিসেবে এমএম মাহফুজুর রহমানের নাম থাকলেও মোবাইল নম্বর যাচাই করে দেখা যায়, তা একজন ভিন্ন ব্যক্তির।”
তিনি আরও বলেন, “সিটি করপোরেশন তিনটি কাজের ফাইল দিতে পেরেছে, তবে চলমান সাতটি কাজের কোনো কাগজপত্র সরবরাহ করতে পারেনি। কাজগুলোতে সঠিক প্রতিযোগিতা হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়নি।”
রাসিকের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন বলেন, “সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে কাজগুলো করছে। তবে কিছু কাগজপত্র এখনও প্রস্তুত করা হয়নি।”