মো: রবিউল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার, আমার সকাল ২৪
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চলছে—এমন অভিযোগ উঠেছে প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে। অবৈধ এই জালে নির্বিচারে মাছ ধরার কারণে বিলের দেশীয় মাছসহ কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ ও ব্যাঙসহ নানা জলজ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু জেলে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বিলে এই জাল ফেলছে। কৌশলগতভাবে তৈরি হওয়ায় বড় মাছের পাশাপাশি রেণু মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীও আটকা পড়ে। বড় মাছ সংগ্রহের পর রেণু মাছ ও প্রাণীগুলো শুকনো জায়গায় ফেলে রাখা হয়, ফলে সেগুলো মারা যাচ্ছে। এতে বিলের প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
দমদমা গ্রামের আসাদুল ইসলাম বলেন, “রিং জাল শুধু মাছ নয়, জলজ প্রাণীর ডিমও আটকে নষ্ট করে। এখন বিলের দেশীয় মাছ প্রায় হারিয়ে গেছে।”
সান্দিড়া গ্রামের জেলে মিন্টু মিয়া জানান, “চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহারের কারণে মাছের ডিম ও রেণু পোনা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
ছাতনী গ্রামের রতন খান বলেন, “এবার মাছের প্রজনন অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম হয়েছে। বাজারে দেশীয় মাছও আর পাওয়া যাচ্ছে না।”
সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “চায়না দুয়ারি জাল বন্ধ না হলে দেশীয় মাছ একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।”
জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। বেশিরভাগ জেলে সুতি জাল ও খলসানি দিয়ে মাছ ধরলেও কিছু অসাধু জেলে ও গৃহস্থরা এই নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছে। এতে অন্যান্য জেলের জালে মাছ পড়ছে না, ফলে তারা বেকার হয়ে পড়েছে।
অঞ্চলের হাট-বাজার ছাড়াও গ্রামেগঞ্জে চায়না দুয়ারি জাল তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে অবাধে।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন বলেন, “অভিযান চালিয়ে কয়েকটি জাল আটক ও জরিমানা করা হয়েছে। নিষিদ্ধ এই জালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”