মাধবপুর (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি :
ফোরকান উদ্দিন রোমান
হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নামে ইজারা নেওয়া ৫টি দোকানের কয়েক বছর ধরে ভাড়া উত্তোলন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।এটি শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বের ব্যর্থতা নাকি আইনি জটিলতা,এ নিয়ে চলছে এলাকায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
জানা যায়,মাধবপুরে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আয়ের একমাত্র উৎস সমিতিটির নামে বরাদ্দ হওয়া ৮ শতক জায়গায় ১১ ছাটারের ৫টি দোকান ৩ বছর যাবৎ ভাড়া উত্তোলিত হচ্ছে না।দোকানসমূহের মাসিক ভাড়া প্রায় ৩-৫ হাজার পর্যন্ত।সে হিসেবে বিপুল পরিমাণ ভাড়ার বকেয়া পাওনা রয়েছে সমিতির।দোকানসমুহের স্থাপনাও সমিতির অর্থায়নে নির্মিত হয়।দোকানগুলোর অবস্থান মাধবপুর পৌর বাজারের সোনালী ব্যাংকের পূর্ব পাশে ধান বাজারের কাছে।প্রত্যেকটি দোকানের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ সিকিউরিটি বাবদ অর্থ জমা থাকারও কথা রয়েছে।ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ায় এটি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।নবায়ন পুন:বহালের জন্যে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও আবেদন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ,ভাড়া উত্তোলনে সমিতির পক্ষ থেকে কোন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। দোকানগুলো সমিতির নামে ইজারা ছিল।এখনো সমিতির নামেই নবায়ন হওয়ার কথা। কারণ সমিতি সব সময় অগ্রাধিকার।এছাড়া ঘরোয়া নিলাম করাও বেআইনি। নিলাম প্রকাশ্যে দিতে হয়। ৩/৪ বছর ধরে ভাড়াটিয়াগন ভাড়া দিচ্ছেন না।বিশেষ মহল কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই নিদিষ্ট লোকদের নিজেদের নামে ইজারা নবায়ন করে ফেলেও সেটিও অনিয়ম বহির্ভূত সেটিও নিয়ম বহির্ভূত হবে। সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের রিট করাও যেতে পারে।ভারা উত্তোলন করতে না পারা সমিতির নেতৃত্বের ব্যর্থতা।এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া প্রয়োজন ছিল।
এসব ব্যাপারে দোকানসমূহের কয়েকজন ভাড়াটিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে,তাদের অধিকাংশই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মাধবপুর উপজেলার সহকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান,সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তৃতায়ও এ বিষয়ে আমি প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।সমিতির সম্ভাব্য ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা দোকানের ভাড়া বাবদ বকেয়া পাওনা রয়েছে।
কেউ গোপনে সেখান থেকে সুবিধা নিচ্ছে কি না সে বিষয়েও তদন্তের দাবি করছি।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সমিতি মাধবপুর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মো:সোলায়মান জানান,নিরানব্বি বছরের জন্য ইজারা শিক্ষক সমিতির নামে বহাল রয়েছে। একটি গ্রুপ এখানে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।অতীতেও সমিতির ৫৪ লাখ টাকার দুর্নীতি বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ দিয়েছিলাম।কোন কর্মকর্তাই এটির সমাধান করে যান নি।এখনও দোকান সংক্রান্ত সমস্যা চলমান রয়েছে।
শিক্ষকদের দাবী, শিক্ষক সমিতির আয়ের অন্যতম উৎস দোকানসমূহের ভাড়া উত্তলেত না হওয়ায় সমিতির কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।সংগঠনের কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে অসুস্থ শিক্ষকদের সহযোগিতা কিংবা বিদায় সংবর্ধনার খরচ ও বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।জরুরী ভিত্তিতে সমিতির তহবিল সচল করতে বকেয়াসহ ভাড়া উত্তোলন করা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, সমিতির কিছু আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে পূর্বেও কিছু অভিযোগ ছিল।শিক্ষকরা জাতির আদর্শ। আজকে তারা যদি নীতি-বহির্ভূত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তাদের কাছ থেকে কি শিখবে দেশ ও দেশের মানুষ এই প্রশ্ন এখন মাধবপুরের তরুণ সমাজের।