১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
ভালোবাসা উদযাপনের বিশেষ দিন হিসেবে বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস'। এই দিনটি প্রেমিক-প্রেমিকা, পরিবার, বন্ধু এবং প্রিয়জনদের মধ্যে ভালোবাসা ও স্নেহের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। কিন্তু কীভাবে এলো এই দিনটি? এর পেছনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানা যাক।
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। এটি খ্রিস্টীয় সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের স্মরণে পালিত হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন রোমান ধর্মযাজক, যিনি তৃতীয় শতাব্দীতে রোমে বসবাস করতেন। সেই সময় রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের শাসনামলে সৈন্যদের বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল। সম্রাটের ধারণা ছিল, বিবাহিত পুরুষরা ভালো যোদ্ধা হতে পারে না। কিন্তু সেন্ট ভ্যালেন্টাইন গোপনে সৈন্যদের বিবাহ দেওয়া শুরু করেন। এ কারণে তিনি সম্রাটের রোষের শিকার হন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
একটি জনপ্রিয় কিংবদন্তি অনুসারে, কারাগারে থাকাকালীন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়েকে সুস্থ করে তোলেন। মৃত্যুর আগে তিনি মেয়েটিকে একটি চিরকুট লিখে যান, যাতে লেখা ছিল, "তোমার ভ্যালেন্টাইনের কাছ থেকে"। এই ঘটনাটিই ভালোবাসা দিবসের চিঠি বা কার্ড পাঠানোর ঐতিহ্যের সূচনা করে।
ভালোবাসা দিবস এখন শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি পরিবার, বন্ধু এবং নিজের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশেরও দিন। এই দিনে মানুষ তাদের প্রিয়জনদের জন্য উপহার, ফুল, চকলেট এবং ভালোবাসার বার্তা আদান-প্রদান করে। বিশেষ করে লাল গোলাপ, হৃদয় আকৃতির জিনিসপত্র এবং কার্ড এই দিনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশেও দিনটি ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়। তরুণ-তরুণীরা এই দিনে তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে। বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, শপিং মল এবং পার্কে বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি পালন করা হয়।
ভালোবাসা দিবস নিয়ে কিছু সমালোচনাও রয়েছে। অনেকের মতে, ভালোবাসা প্রকাশের জন্য একটি নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন নেই। আবার কিছু সংস্কৃতিতে এই দিনটিকে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব হিসেবে দেখা হয়। তবে দিনটির মূল উদ্দেশ্য ভালোবাসা ও মানবিক বন্ধনকে উদযাপন করা।
ভালোবাসা দিবস শুধু একটি দিনের উদযাপন নয়, এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ভালোবাসা ও মানবিক সম্পর্কের মূল্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসের নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এই দিনটি আজ বিশ্বজুড়ে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
লেখক: [বাদল সিকদার।]
প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪