
আরিফ হাসান গজনবী
রামপাল, বাগেরহাট
“হয় আমাদের বাঁধ তৈরি করুন, না হয় আমাদের হত্যা করুন”—এমন হৃদয়বিদারক শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালি ইউনিয়নের রোমজাইপুর ও উড়াবুনিয়া গ্রামের শত শত এলাকাবাসী।
আজ বুধবার রামপাল ঘষিয়াখালি চ্যানেলের তীরবর্তী এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা দীর্ঘদিন ধরে চলমান নদীভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কারের দাবিতে জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামপাল ঘষিয়াখালি চ্যানেলের তীরবর্তী পেড়িখালি, রোমজাইপুর ও উড়াবুনিয়া গ্রামসহ প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে নদীভাঙনের ফলে কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি, তিনটি গ্রামের একমাত্র চলাচলের সড়কটিও আংশিক ধসে পড়ে যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
রামপাল ঘষিয়াখালি চ্যানেল দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। এটি মোংলা সমুদ্রবন্দর ও উত্তরবঙ্গের মধ্যে সরাসরি নৌযোগাযোগের মাধ্যম। প্রতিদিন অসংখ্য বাণিজ্যিক নৌযান এই চ্যানেলের উপর দিয়ে চলাচল করে। এই নদীর পাড়েই গড়ে উঠেছে পেড়িখালি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি গ্রাম, যা এখানকার মানুষের জীবিকা, কৃষি ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া এলাকাবাসীরা বলেন, “বারবার অভিযোগ ও আবেদন জানিয়েও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা এখন চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছি।” তারা আরও জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রামপাল ঘষিয়াখালি চ্যানেলের পাড়বর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হোসনেয়ারা জামিল সুমানা বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। ঈদের পর ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”