
সাজেদুল ইসলাম রাসেল, বিশেষ প্রতিনিধি, বগুড়া
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের ঘোষণার পর থেকেই বগুড়ায় রাজনীতির মাঠে শুরু হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী বাছাই ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যস্ত সময় পার করছে।
জেলায় মোট সাতটি সংসদীয় আসন থাকায় এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠেছে আগেভাগেই। বিশেষ করে বিএনপি ইতোমধ্যে পাঁচটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, শোডাউনসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান—দলের যাকে প্রার্থী করা হবে, তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বগুড়ার পাঁচ আসনে যেসব নেতাকে মাঠে নামতে বলা হয়েছে তারা হলেন—
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা): সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ): জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া): সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি সভাপতি আবদুল মহিত তালুকদার
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম): সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন
বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট): সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্পষ্টভাবে বলেছেন—মনোনয়ন যাকে দেওয়া হবে, তার পক্ষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো বিশৃঙ্খলা বা বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।”
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও সাতটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমেছে। জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার জানান, বর্তমানে এককভাবে প্রার্থী দেওয়া হলেও ভবিষ্যতে ইসলামী সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাসদও বগুড়ার বিভিন্ন আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আবদুর রউফসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও প্রচারণা শুরু করেছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরাঞ্চলের রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়ায় এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তুমুল। বিএনপির ঐক্য ও প্রার্থীদের মাঠে কাজের দক্ষতাই নির্ধারণ করবে ধানের শীষের ভাগ্য।