শেখ তাইজুল ইসলাম মংলা প্রতিনিধি
সুন্দরবনে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জলদস্যুদের অপতৎপরতা। নদ-নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণের টাকা আদায় করছে তারা। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের পর মুক্তি মিলছে । তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে জীবিকার টানে সুন্দরবনে প্রবেশ করা জেলেদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাম্প্রতি অভিযানে আটক বেশ কিছু ডাকাত তার মধ্যে অন্যতম গত ২৬ আগস্ট সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর এক সদস্য কে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে কোর্সগার্ড গত ৬ই সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছোট সুমন বাহিনীর চার সদস্যকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ আটক করে কোর্সগার্ড
গত ১২ই সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের শিবসা নদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাত রাঙা বাহিনীর দুই সদস্যকে অস্ত্রসহ আটক করে কোর্সগার্ড ও অপহৃত ৯ জেলেকে উদ্ধার করেন তারা।
সম্প্রতি অভিযানে আটককৃতরা ডাকাতরা হলেন মোঃ আলমগীর হোসেন (৪০) মোঃ বিলাল শেখ (২৫)রবিউল হোসেন (৩২) মোঃ জিন্নাত হাওলাদার (৩৫) কালাম গাজী (২৪) সহ অনেকেই
সাম্প্রতিক মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলেরা বলেন জলদস্যুরা মুক্তিপণের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করেন দিতে না পারলে মানসিক নির্যাতন করা হয় বিভিন্ন নামে
সুন্দরবনে নতুন নতুন বেশকিছু দস্যু বাহিনীর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম রাঙা বাহিনী সুমন বাহিনী করিম শরিফ বাহিনী সহ অন্যান্য
নাম পরিচয় বলতে অনিচ্ছুক জেলেরা আরো জানান, তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে এক তারিখে আমরা সুন্দরবনে ঢুকেছিলাম। কিন্তু জলদস্যুদের অপতৎপরতার কারণে বেশিদিন থাকতে পারলাম না। সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরার সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তাঁরা সুন্দরবনে জলদস্যুদের অপতৎপরতা রোধে বন বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে পুর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কর্মকর্তা জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকাসহ যেসব এলাকায় জেলেরা মাছ ধরে সে সমস্ত এলাকায় বন বিভাগ ও স্মার্ট পেট্রোল টিমের পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে। জেলেদেরকে নজরে রাখার জন্য টিমের সদস্যদেরকে বলা হয়েছে।
এরপরও কোন জেলে অপহরণের শিকার হলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে কিছুই জানানো হয় না। নিরাপত্তার স্বার্থে তারা আমাদের কাছে গোপন রাখে। সঠিক তথ্য পেলে বনবিভাগ, ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করতে পারে বলে জানান এই বন কর্মকর্তার।
মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আনিসুর রহমান জানান, কোন জেলে অপহরণ হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আমাদেরকে কিছুই জানায় না। অপহৃত জেলেদের বিপদ হতে পারে এই ভেবে তাদের অভিভাবকরা টাকা দিয়ে তাদেরকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করে। এরপরে অভিযোগ পেলে পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনে জেলেদের অপহরণের বিষয়টি আমরা তৃতীয় ও চতুর্থ পক্ষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।’