
মোঃ শাহীন হাওলাদার
ক্রাইম রিপোর্টার
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় সংঘটিত এক অজ্ঞাতনামা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং দুই আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মামলার বিস্তারিত তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আজমীর হোসেন।
তিনি জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর এলাকায় হাকিম শেখের কলাবাগানের ভেতর একটি অজ্ঞাতনামা লাশ পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতসহ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
পরবর্তীতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা হলে তার পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। নিহতের পরিবার ফরিদপুরে এসে লাশ শনাক্ত করে এবং এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা রুজুর পর ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল)-এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আলামত, নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কল লিস্ট এবং বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়।
তদন্তের ধারাবাহিকতায় গত ২০ ডিসেম্বর মামলার প্রধান আসামি রাজিব খান (৪১) কে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরদিন ২১ ডিসেম্বর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানার বায়তুল আমান এলাকা থেকে দ্বিতীয় আসামি মান্নান হাওলাদার (৩২) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মান্নান হাওলাদারের দেখানো মতে তার ভাড়া বাসা থেকে নিহতের লুণ্ঠিত রিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত টিপু ও আসামি রাজিব খান একই ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পাশাপাশি টিপু রিকশা চালাতেন। গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে নেশা করার প্রলোভন দেখিয়ে রাজিব খান টিপুকে রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে ডেকে নেন। পরে টিপুর রিকশায় করে তারা শিবরামপুর এলাকার চাঁদপুর গ্রামের একটি নির্জন কলাবাগানে যান।
সেখানে নেশা করার একপর্যায়ে আসামি রাজিব তার কাছে থাকা লোহার পাতি দিয়ে টিপুর মাথায় আঘাত করে। টিপু মাটিতে পড়ে গেলে মাথা ও মুখে আরও একাধিক আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে ব্যবহৃত চাকু ও লোহার পাতি পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর নিহতের লাশ কলাবাগানে ফেলে রেখে আসামিরা রিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।