প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত?
উপকারিতা, অপকারিতা কি কি ? কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ? বিস্তারিত থাকছে এই প্রতিবেদন এ ।
সুস্বাস্থ্যের জন্য কিসমিস একটি অত্যন্ত উপকারী খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য।
তবে, প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণের উপর।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
সাধারণত, প্রতিদিন 1/4 কাপ (40-50 টি) / 40 গ্রাম কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। এটি আপনাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে এবং আপনার ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
এই পরিমাণে কিসমিসে থাকে:
- ক্যালোরি: 120
- ফাইবার: 3 গ্রাম
- পটাশিয়াম: 235 মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি6: 0.1 মিলিগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ: 0.3 মিলিগ্রাম
- আয়রন: 1.3 মিলিগ্রাম
প্রতিদিন সকালে ভেজানো কিসমিস খাওয়ার নানা উপকারিতা
কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা
- হজমে সহায়তা করে: কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফুলে উঠে প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে। এটি হজমশক্তি উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
- রক্তাল্পতায় উপকারী: কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকে যা রক্তাল্পতার চিকিৎসায় সাহায্য করে। এতে থাকা তামা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও সহায়তা করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কিশমিশ পটাশিয়াম সমৃদ্ধ যা শরীরের লবণাক্ততার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: কিশমিশে বোরন নামক খনিজ পদার্থ থাকে যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামও থাকে যা হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: কিশমিশে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: কিশমিশে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ঠান্ডা লাগা, সর্দি, কাশি ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- চোখের জন্য ভালো: কিশমিশে লুটেইন এবং জেক্সানথিন নামক দুটি উপাদান থাকে যা চোখের জন্য ভালো এবং চোখের বিভিন্ন রোগ, যেমন ম্যাকুলার ডিজেনারেশন, প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ত্বকের জন্য ভালো: কিশমিশে ভিটামিন এ এবং ই থাকে যা ত্বকের জন্য ভালো এবং ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- মস্তিষ্কের জন্য ভালো: কিশমিশে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ থাকে যা মস্তিষ্কের জন্য দ্রুত শক্তির উৎস। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: কিশমিশে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে: কিশমিশে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফ্রি র্যাডিক্যাল নামক ক্ষতিকর অণুগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা
তবে, মনে রাখবেন:
- বেশি পরিমাণে কিসমিস খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। কারণ, কিসমিসে ক্যালোরি বেশি থাকে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের সাবধানে কিসমিস খাওয়া উচিত। কারণ, কিসমিসে চিনি বেশি থাকে।
- কিডনি রোগীদেরও সাবধানে কিসমিস খাওয়া উচিত। কারণ, কিসমিসে পটাশিয়াম বেশি থাকে।
যদি আপনি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেন তবে আপনার কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা নিয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
মনে রাখবেন, কিসমিস একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও, অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করতে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।