নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: মোঃ আরিফ হোসেন
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেমবাজার এলাকায় সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার কাশেমবাজার মসজিদে ছাত্রশিবির আয়োজিত কোরআন শিক্ষা ক্লাস চলাকালে ইউনিয়ন যুবদল সভাপতির নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠে। এর পর রোববার দুপুরে ছাত্রশিবির সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পরে তারা বিকেলে একই মসজিদে প্রতিবাদ জানিয়ে দারসুল কোরআন প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঘোষণা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আছর নামাজের পর প্রতিযোগিতা শুরু হলে মসজিদের বাইরে বিএনপি নেতাকর্মীরা ‘জিয়ার সৈনিক’ স্লোগান দিতে থাকেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষে পরিণত হয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, সংঘর্ষের সময় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মসজিদের ভেতরে অবস্থান নেন, আর বিএনপি নেতাকর্মীরা বাইরে বিক্ষোভ ও স্লোগান চালিয়ে যান। শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বিএনপি নেতাকর্মীরা মসজিদের ভেতরে প্রায় ৭০ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরুদ্ধদের নিরাপদে বের করে আনে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান বলেন,
“আমাদের শান্তিপূর্ণ কোরআন ক্লাসে বিএনপি হামলা চালিয়েছে। আমাদের ভাইয়েরা মসজিদে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব ভূমিকা পালন করছে।”
অন্যদিকে নেওয়াজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন বাবুল অভিযোগ করেছেন,
“নামাজ শেষে মসজিদ থেকেই হামলা হয়েছে। যুবদলের সাবেক সভাপতি ফারুকের দুই ভাইসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মসজিদের ভেতর থেকে বারবার হামলা চালানো হয়েছে।”
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও জানান, আসরের নামাজের পর শিবিরের নেতাকর্মীরা মসজিদে স্লোগান দিয়ে দলীয় কার্যক্রম শুরু করলে তারা বাধা দিলে উল্টো হামলা চালানো হয়। এতে নেওয়াজপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. আক্তার, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমানসহ ৮ নেতাকর্মী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত থাকলেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।