স্টাফ রিপোর্টার
মোঃ মাসুম বিল্লাহ
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা নিম্নভূমি হওয়ায় বছরের প্রায় ৬ মাস পানিবন্দি থাকতে হয় স্থানীয়দের। এক মৌসুমের ফসল দিয়েই সারা বছর অভাব-অনটনে দিন কাটানো হতো। তবে সেই চিত্র বদলে দিয়েছে ভাসমান সবজি চাষ। বর্তমানে এ উপজেলায় প্রায় ১৮০ হেক্টর জলাশয়ে ভাসমান সবজি চাষ হচ্ছে।
দুই শতাধিক বছরের পুরনো এ কৃষি পদ্ধতি ইতোমধ্যে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়কে স্বীকৃতিপত্রও হস্তান্তর করা হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব ও জৈব এই কৃষি পদ্ধতি আধুনিক যুগেও অত্যন্ত লাভজনক।
বর্ষা মৌসুমে কচুরিপানা, দুলালীলতা, টেপপানা, খড়কুটা ও নারিকেলের ছোবড়া স্তরে স্তরে সাজিয়ে তৈরি করা হয় ভাসমান বেড। এসব বেডে ৪০ প্রজাতির শাক-সবজি চাষ হয়। পুরুষরা বেড তৈরি ও পরিচর্যা করেন, আর নারী ও শিশুরা ঘরে বসে চারা তৈরিতে সহায়তা করেন।
মুগারঝোর গ্রামের কৃষক ইব্রাহীম সেখ জানান, ভাসমান চাষ শুরু করার পর আর অভাব-অনটনের মুখে পড়তে হয় না। এবার তিনি ২০টি বেডে চারা করেছেন, যার প্রতিটি বেডে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন বেডপ্রতি অন্তত ২০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবেন।
দেউলবাড়ী গ্রামের কৃষক রাজেস আলী বলেন, “বিষমুক্ত হওয়ায় এসব সবজির চাহিদা অনেক বেশি। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়।”
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসরাতুন্নেছা এশা জানান, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ১৭৫টি ভাসমান বেড তৈরি হয়েছে। কম খরচে, কম সারে ও প্রায় বিনা সেচেই এ ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।