
মোঃ মাসুম বিল্লাহ
স্টাফ রিপোর্টার
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের ইছাপাশা গ্রামে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের ফাঁদে পড়ে মো. বাচ্চু মল্লিক (৪৭) নামে এক কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো নিজের বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করতে যান মুক্তা মল্লিকের ছেলে ও ইছাপাশা ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাচ্চু মল্লিক। এ সময় পার্শ্ববর্তী জমিতে অবৈধভাবে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে লাইন টেনে ইঁদুর ধরার নামে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখেন একই গ্রামের মো. আলাউদ্দিন জোমাদ্দার ও মো. পিন্টু হাওলাদার। সেই ফাঁদে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বাচ্চু। ঘটনার সময় পাশের মাঠে থাকা স্কুলশিক্ষার্থীরা বাচ্চুকে কাঁপতে দেখে চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন ও পিন্টু দৌড়ে এসে দ্রুত খুঁটি থেকে লাইন খুলে গোপনে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বাচ্চুর পুড়ে যাওয়া হাতে কাঁদামাটি লেপে ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টাও করেন তারা। পরে স্থানীয়রা এসে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। নিহতের মেয়েজামাই মো. শাকিল হোসেন বলেন,
“শ্বশুর প্রতিদিনের মতো জমিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। আলাউদ্দিন আর পিন্টু ইঁদুর ধরার কথা বলে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতেছিল। সেই ফাঁদেই তিনি মারা গেছেন। পরে তারা বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেছে।”নিহতের স্ত্রী সীমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমার স্বামী গরিব মানুষ। নিজের জমিতে কাজ করতেন। কেউ এমনভাবে ফাঁদ পেতে রাখবে— ভাবতেও পারিনি। এটা আমার স্বামীর হত্যাকাণ্ড। আমি ন্যায়বিচার চাই।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই এলাকায় কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছিলেন। সতর্ক করা হলেও তারা এ কাজ বন্ধ করেননি। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত আলাউদ্দিন জোমাদ্দার ইছাপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত। ঘটনার পর তার স্কুল ও বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে পিন্টুর পরিবারও বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন,
“ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হবে। তদন্তের ভিত্তিতে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”