কামরুল ইসলাম, টেকনাফ প্রতিনিধি
বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত টেকনাফ উপজেলা শুধু ভৌগোলিকভাবে নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের কারণেও বিশেষভাবে পরিচিত। কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত এই এলাকা বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সর্বশেষ সীমানা এবং প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
টেকনাফের অন্যতম আকর্ষণ নাফ নদী, যা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রাকৃতিক সীমারেখা তৈরি করেছে। নদীর স্বচ্ছ নীল জল, ঢেউয়ের কলতান ও সূর্যাস্তের রঙিন দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে অনাবিল প্রশান্তি এনে দেয়।
এছাড়া টেকনাফ থেকেই প্রতিদিন হাজারো পর্যটক জাহাজ ও ট্রলারে করে যাত্রা করেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে, যা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। ফলে টেকনাফকে সেন্ট মার্টিনের প্রবেশদ্বার এবং বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের আরেক চমৎকার উদাহরণ হলো টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এখানে বসবাস করে বিরল প্রজাতির হাতি, হরিণ, বানর ও নানা প্রজাতির পাখি। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এই অভয়ারণ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এনে দেয়।
টেকনাফে অবস্থিত নাফ নদীর সীমান্তবাজার, যেখানে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমিত বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এই সীমান্তবাণিজ্য স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করেছে এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে।
পাহাড়, নদী, সাগর ও বনভূমির অনন্য সমন্বয়ে গঠিত টেকনাফের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এক অপরিসীম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
সব মিলিয়ে, টেকনাফ শুধু ভৌগোলিক দিক থেকে নয়, প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর অপরূপ সৌন্দর্য, বন্যপ্রাণী ও নদী-পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য টেকনাফকে করেছে বাংলাদেশের বিখ্যাত পর্যটন এলাকা।