
মোঃ দুলাল সরকার
গজারিয়া প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ঋণের কিস্তির চাপ ও পারিবারিক মানসিক টানাপোড়েনের জেরে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূর নাম জিলহজ আক্তার (২৮)। তিনি কুমিল্লা জেলার চাঁন্দিনা উপজেলার পরচঙ্গা গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে।
নিহতের স্বামী কামরুল ইসলাম (৩৫) কুমিল্লার চাঁন্দিনা উপজেলার বড় বাড়েরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন বাবুর্চি। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর ধরে তিনি গজারিয়ায় কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও তিন সন্তান—দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের পুরান বাউশিয়া গ্রামে আব্দুল হাসানের ভাড়া বাসায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুদিন ধরে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ চলছিল। শনিবার রাতে স্বামী কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পর স্ত্রী কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় কামরুল ইসলাম তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, যেহেতু ঋণ নেওয়া হয়েছে, ধীরে ধীরে সময়মতো পরিশোধ করা হবে। ওই রাতেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ভোররাতে ফজরের নামাজের সময় কামরুল ইসলাম ঘুম থেকে ওঠেন। এ সময় তাদের বড় মেয়ে ওয়াশরুমে যেতে গিয়ে রান্নাঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মাকে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেয়। পরে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং ৯৯৯ নম্বরে কল দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে গজারিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী কামরুল ইসলামকে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী এসআই মেহেদী সোহরত জানান, নিহতের শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, তবে গলায় ফাঁসের দাগ ছিল।
নিহতের ভাই ইব্রাহিম (৪০) জানান, তারা এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ করতে চান না এবং লাশ দাফনের জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আলি বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। স্বামীকে থানায় আনা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।