ডাঃ বাদল সিকদার।
খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কগুলোর অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক। কোথাও খানাখন্দ, কোথাও আবার উঠে গেছে পিচ। সড়ক নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দেড় ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে এখন লাগে তিন ঘণ্টা।
খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ১২টি স্থানে পিচ উঠে গেছে, কোথাও উঁচু-নিচু ঢেউয়ের মতো অবস্থা, আবার কোথাও বড় বড় গর্ত। চার বছর আগে ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কটির এমন বেহাল দশা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। গত ১১ মাসে এই সড়কে ৪৫টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক।
চালক আব্দুল হাকিম মোল্লা জানান, প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা পার হতে হয়। অন্যদিকে চালক হাসিবুর রহমান বলেন, সড়কটি এখন সম্পূর্ণভাবে পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন।
যশোর-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে একই অবস্থা। টায়ার ফেটে গাড়ি উল্টে যাওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। সড়কের গর্তগুলো ভরাট করা হলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না।
সুন্দরবনে যাওয়ার একমাত্র সড়ক পথ সাতক্ষীরা-শ্যামনগর মহাসড়ক দীর্ঘ এক যুগ ধরে সংস্কারহীন। এতে সুন্দরবনে পর্যটক কমছে এবং স্থানীয় মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন।
ঝিনাইদহ থেকে যশোরগামী মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ইটের সলিং করায় ধুলার কারণে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, জরুরি সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। তবে অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের এমন ক্ষতি হচ্ছে বলে সড়ক বিভাগ দাবি করেছে।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ১১ মাসে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৬৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৯০ জন নিহত এবং ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই সড়কের এই বেহাল দশা। তারা দ্রুত টেকসই সংস্কার কার্যক্রমের দাবি জানিয়েছেন।