ফিতনা একটি আরবি শব্দ যার অর্থ বিভ্রান্তি, বিভেদ, বিপদ, পরীক্ষা, আকর্ষণ ইত্যাদি। ইসলামে, ফিতনা বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
কোরআনে “ফিতনা” শব্দটি বহুমুখী অর্থ বহন করে। এর মূল অর্থগুলি হল:
১) পরীক্ষা ও যাচাই: আল্লাহতাআলা মানুষকে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষাগুলি বিভিন্ন রূপে আসতে পারে, যেমন সম্পদ, ক্ষমতা, বিপদ, সুখ-দুঃখ ইত্যাদি। এই পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে আল্লাহতাআলা মুমিনদের ঈমানের সত্যতা ও দৃঢ়তা যাচাই করেন। (সূরা আল-বাক্বরাহ: ২১৪, আল-ইমরান: ১৫৫)
২) বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টি: ফিতনা বিভ্রান্তি, বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মানুষকে সত্য পথ থেকে বিচ্যুত করে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করতে পারে। (সূরা আল-বাক্বরাহ: ১৯১, আল-ইমরান: ১০২)
৩) বিপদ ও সঙ্কট: ফিতনা বিপদ ও সঙ্কটের কারণ হতে পারে। এটি যুদ্ধ, দাঙ্গা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদির রূপ ধারণ করতে পারে। (সূরা আল-Anfal: ২৮, আল-মুমতাহিনাহ: ৮)
৪) আকর্ষণ ও প্রলোভন: ফিতনা দুনিয়ার আকর্ষণ ও প্রলোভনের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। সম্পদ, ক্ষমতা, খ্যাতি, ভোগ-বিলাস ইত্যাদির প্রলোভনে পড়ে অনেকে সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। (সূরা আল-Anfal: ৬৭, আল-মুমতাহিনাহ: ৪)
৫) শাস্তি: যারা আল্লাহর নির্দেশাবলী অমান্য করে ও ফিতনার পথে চলে তারা আল্লাহর শাস্তির সম্মুখীন হবে। (সূরা আল-Imran: ১৫৫, আল-Maidah: ৭৮)
কোরআনে ফিতনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে এবং মুমিনদের ফিতনা থেকে সতর্ক থাকার এবং সত্য পথে অটল থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কুরআনে ফিতনার উল্লেখ বহুবার করা হয়েছে। আল্লাহ মুসলমানদেরকে ফিতনা থেকে সতর্ক থাকতে এবং সঠিক পথে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। ফিতনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য আমাদের ঈমানের প্রতি দৃঢ় থাকতে হবে, আল্লাহর আইন মেনে চলতে হবে এবং পাপাচার থেকে বিরত থাকতে হবে।
ফিতনার কিছু উদাহরণ:
উপসংহার:
ফিতনা একটি জটিল বিষয় যার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত ফিতনা থেকে সতর্ক থাকা এবং সঠিক পথে থাকার জন্য চেষ্টা করা। ঈমানের মাধ্যমেই আমরা ফিতনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে পারি।