কিশোরগঞ্জের বাজারে শীতের পিঠার জমজমাট আমেজ
বিশেষ প্রতিনিধি : মো: মনিরুজ্জামান
শীত নামতেই কিশোরগঞ্জের হাট-বাজারজুড়ে শুরু হয়েছে পিঠার মৌসুমি উৎসব। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই পিঠা সংস্কৃতি আজও কিশোরগঞ্জের মানুষের জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। শীতের ভাপা পিঠা, চিতইপিঠা, তেলের পিঠা, দুধচিড়া, ডিম পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠা এখন বাজারজুড়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে।
কেল্লাবাড়ি বাজারে প্রতিদিন বিকেল থেকেই জমে ওঠে পিঠার দোকান। ভাপা পিঠার ধোঁয়া, খেজুর গুড়ের মিষ্টি গন্ধ আর ক্রেতাদের ভিড়ে বাজার হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। চিতই পিঠার সঙ্গে পরিবেশন করা হচ্ছে সরিষা, ধনেপাতা, কালোজিরা ও শুটকিসহ বিভিন্ন ভর্তা। পিঠার প্রকারভেদ ও আকার অনুযায়ী দাম ৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত।
বাজারের পিঠা বিক্রেতা বুলবুলি রায় জানান, ‘শীতই আমাদের প্রধান মৌসুম। খেজুর গুড়ের গন্ধ উঠতে শুরু করলেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়।’
শুধু বাজারেই নয়, কিশোরগঞ্জের গ্রামাঞ্চলেও সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় পিঠা বানানোর মিলনমেলা। পরিবার-পরিজন সবাই মিলে পিঠা বানানো ও খাওয়ার আনন্দে শীতের রাতগুলো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অনেক পরিবারে শীতকালীন পিঠা উৎসব এখন নিয়মিত আয়োজন।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজিত পিঠা উৎসব এবং স্কুল-কলেজে পিঠা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তরুণ প্রজন্মও নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে আরও গভীরভাবে যুক্ত হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী লতা মহন্ত বলেন, ‘শীত এলেই আমরা বান্ধবীরা পিঠা খেতে বের হই। এখন এমন অনেক দোকান আছে যেখানে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে নতুন স্বাদের পিঠাও পাওয়া যায়।’
শীতের আগমনে কিশোরগঞ্জজুড়ে যে পিঠার উন্মাদনা শুরু হয়েছে, তা প্রমাণ করে মানুষ এখনো স্বাদের টানে, শেকড়ের টানে এবং ঐতিহ্যের ভালোবাসায় ফিরে আসে কেল্লাবাড়ির শতবর্ষী পিঠা সংস্কৃতির কাছে।
