গ্রীষ্মের এই দাবদাহে বাজারে ভরে আছে সবুজ, টক আম। কাঁচা আম কেবল খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, বরং এর রয়েছে অজস্র স্বাস্থ্যগুণ।
কাঁচা আমে কোন এসিড থাকে
কাঁচা আমে প্রধানত সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। এছাড়াও, কম পরিমাণে ম্যালিক অ্যাসিড এবং টার্টারিক অ্যাসিডও থাকতে পারে।
কাঁ”চা আমের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা :
১. হজমশক্তি উন্নত করে: কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কাঁচা আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩. ত্বক ও চুলের যত্ন: ভিটামিন এ সমৃদ্ধ কাঁচা আম ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কাঁচা আমে ক্যালোরি কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৫. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কাঁচা আম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কাঁচা আমে থাকা ম্যাঙ্গানিজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৭. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে: কাঁচা আমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে।
৮. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: কাঁচা আমে থাকা ফাইবার LDL (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৯. গরমে শরীর ঠান্ডা রাখে: কাঁচা আমের জলীয়তা বেশি থাকে যা গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
১০. মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: কাঁচা আমে থাকা অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
যদিও কাঁচা আমের অজস্র স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে এর কিছু অপকারিতাও লক্ষ্য করা যেতে পারে।
১. অ্যালার্জি: কাঁচা আমে “ইউরিশিয়াল” নামক একটি রাসায়নিক থাকে যা কিছু লোকে অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। এর ফলে ত্বকে ফোলাভাব, চুলকানি, বমি বমি ভাব, এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে।
২. হজমের সমস্যা: বেশি পরিমাণে কাঁচা আম খেলে পেট ফাঁপা, অম্বল, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ কাঁচা আমে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে।
৩. দাঁতের ক্ষতি: কাঁচা আম অত্যন্ত টক, যা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে এবং দাঁতের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।
৪. গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ: অতিরিক্ত কাঁচা আম খাওয়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
৫. ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতা: কাঁচা আমে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতার সাথে কাঁচা আম খাওয়া উচিত।
কাঁচা আম খাওয়ার সময় সতর্কতা:
মনে রাখবেন: নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে এর সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে পারবেন। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এর বিপরীত প্রভাবও দেখা দিতে পারে।