
মোঃ বিল্লাল হোসেন
ক্রাইম রিপোর্টার
আমার সকাল ২৪
কুড়িগ্রাম:
“স্বপ্নেও ভাবিনি ভিক্ষুকের ছেলে হয়ে পুলিশে চাকরি পাবো”—চোখ ভেজা কণ্ঠে এমন কথাই বলছিলেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) মো. হাসানুর রহমান (১৯)।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশে টিআরসি পদে নিয়োগ পাওয়া ৫২ জনের মধ্যে অন্যতম হাসানুর। দারিদ্র্য ও সংগ্রামে ভরা জীবনের গল্প বলতে গিয়ে তিনি জানান, তার বাবা ভিক্ষা করতেন এবং মা রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। ছোট বয়সেই বাবা মারা গেলে তিনি আশ্রয় নেন এতিমখানায়। পরে তার মা অন্যত্র বিয়ে করলে সেখানেই বড় হন তিনি।
হাসানুর বলেন, “ছোটবেলা থেকে এতিমখানায় বড় হয়েছি। কখনো ভাবিনি সরকারি চাকরি পাবো। আমার বাবা যদি আজ বেঁচে থাকতেন, খুব খুশি হতেন।”
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সুখাতি বোর্ডঘর এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে হাসানুর রহমান বড় হয়েছেন নাগেশ্বরী পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার গোলাপ খাঁ শিশু শোধন কেন্দ্রে। স্থানীয় স্কুল-কলেজ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেছেন তিনি। তার বড় বোন বর্তমানে স্বামীসহ ঢাকায় বসবাস করেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার ও টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
জানাগেছে, কুড়িগ্রাম জেলায় টিআরসি পদে ২ হাজার ৩০০ জন প্রার্থী প্রাথমিক শারীরিক মাপ ও সক্ষমতা যাচাইয়ে অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৫৭৭ জন লিখিত পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা পান। পরে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২৬৮ জন। মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে ৫২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
দারিদ্র্য জয় করে সরকারি চাকরি পাওয়ার এই সাফল্যে খুশি সহপাঠী ও স্থানীয়রা। তার মতো অসংখ্য দুঃস্থ তরুণের জন্য এটি এক অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।