
তৌহিদ ইসলাম । ঢাকা
আজ আলোকচিত্রের এক কিংবদন্তী শিল্পী দেবব্রত চৌধুরীর ৭৩ তম জন্মবার্ষিকী। জন্ম ২৪ অক্টোবর ১৯৫২, রাউজান, চট্টগ্রামে। ২০২১ সালের ১৮ জুলাই ক্যানসারের সাথে লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে পরলোকগমন করেন সকলের প্রিয় ‘দেবুদা’।
দেবব্রত চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের আলোকচিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭৭ সালে তৎকালীন ‘বিডিআর’ সদর দপ্তরে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত পশুসম্পদ অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে, এবং পরবর্তীতে টানা প্রায় ২০ বছর ‘পশুসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান’-এ দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০১০ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ ‘লাইভস্টক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এ (সাভার)।
শৈশবেই বাবার কাছ থেকে ফটোগ্রাফিতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। বাবার ঘরে ছিল একটি ‘ডার্করুম’, যেখানে শুরু হয় তাঁর আলোকচিত্রের যাত্রা। ১৯৬৫ সালে কক্সবাজারের ‘পাল’স স্টুডিও’তে ফিল্ম ডেভেলপ ও ক্যামেরায় ছবি তোলা শুরু করেন। সাদাকালো ফটোগ্রাফি ডেভেলপে ছিলেন তিনি এক নিপুণ শিল্পী।
দেশের প্রথম দিকের সিনেমা ‘মাটির পাহাড়’ এর স্টিল ফটোগ্রাফার ছিলেন দেবব্রত চৌধুরী। এছাড়া চট্টগ্রামে নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণ অনুষ্ঠানে তোলা তাঁর ঐতিহাসিক ছবি একসময় নেহরুকে উপহার দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি ‘জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন এবং সেখানে নিজেই শিক্ষাদান করতেন। তাঁর বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন কিংবদন্তী শিল্পী হুমায়ুন ফরিদী ও নাট্যকার সেলিম আল দীন।
১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (বিপিএস)-এর সদস্য হন তিনি, এবং ১৯৮১ সালে বেগার্ট থেকে ফটোগ্রাফির উপর প্রশিক্ষণ নেন। বিপিএস-এর আলোকচিত্রাচার্য মনজুর আলম বেগ তাঁর সদস্যপদ ফি নিজ হাতে পরিশোধ করেছিলেন। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট (বিপিআই) প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি ভাইস প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত হন এবং নিয়মিত শ্রেণি নিতেন সাভার থেকে ঢাকায় এসে।
দেবব্রত চৌধুরী ছিলেন বেগার্ট, বিপিএস, ও বিপিআই পরিবারের নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। ২০১৬ সালে বেগার্ট ইনস্টিটিউট তাঁকে “আলোকচিত্রাচার্য এম এ বেগ পদক” প্রদান করে, এবং ২০১৯ সালে বিপিএস তাঁকে হনারারি ফেলোশিপে ভূষিত করে।