বিশেষ প্রতিনিধি: সাজেদুল ইসলাম রাসেল, বগুড়া।
বগুড়া শহরের নারুলী জিরো পয়েন্ট এলাকায় একজন জুলাই যোদ্ধার পরিবারের কিশোরী মেয়েকে উদ্ধারের নামে অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়ে এক পা বিকলাঙ্গ হয়ে যান মোঃ সোহেল রানা। তিনি বর্তমানে নারুলী এলাকার বাসিন্দা। তার মেয়ে মোছাঃ রাবেয়া সুলতানা সোহানি মালতিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ১৮ জুন প্রতিদিনের মতো স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাওয়ার পর সে আর বাড়িতে ফেরেনি।
পরিবার জানায়, রাবেয়ার স্কুলে যাতায়াতের পথে স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মোঃ সাব্বির হোসেন প্রায়ই তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করতেন। বিষয়টি জানার পর সাব্বিরের হেড মিস্ত্রী তাকে সতর্ক করলেও, পরবর্তীতে সে পুনরায় রাবেয়াকে হুমকি দেয়। দুই দিন পর থেকেই রাবেয়া ও সাব্বির উভয়েই উধাও হয়ে যায়।
পরিস্থিতি অনুধাবন করে রাবেয়ার বাবা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মোঃ সাব্বির হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মুনসুর আলীকে।
অভিযোগ অনুযায়ী, তদন্তের বিভিন্ন ধাপে—ফোন ট্র্যাকিং, সিডিআর বিশ্লেষণ ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনার কথা বলে—এসআই মুনসুর আলী একাধিকবার বাদী পক্ষের কাছ থেকে টাকা নেন। মোট ৫০ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়েছে বলে দাবি করেন সোহেল রানার বোন মোছাঃ মুক্তি খাতুন।
তিনি আরও জানান, “এসআই মুনসুর আলী আমার ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন কাগজপত্রের কথা বলে নিজের কাছে রেখে আর ফেরত দেননি।”
মুক্তি খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
আমার ভাই দেশের জন্য পা হারিয়েছে। আজ সেই পরিবারের সঙ্গেও যদি এমন অন্যায় হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচারের আশায় কার কাছে যাবে?”
এই ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সঙ্গে এমন আচরণ শুধু প্রশাসনের ভাবমূর্তি নয়, পুরো সমাজকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।