ক্রাইম রিপোর্টার │ শরীফ হোসেন শুভ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই যুবককে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয়রা। এতে মো. ইয়ামিন (২৩) নিহত হয়েছেন এবং মো. ফাহিম (২২) গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোমবার বেলা তিনটার দিকে চন্দ্রিমা মডেল টাউনের পাশের বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ জানান, স্থানীয় কয়েকজনকে ছিনতাইয়ের সময় ইয়ামিন ও ফাহিমকে আটক করেন এলাকাবাসী। পরে তাঁদের গণপিটুনি দেওয়া হয়। নিহত ইয়ামিনের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহত ফাহিমও সেখানে চিকিৎসাধীন। তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ছিনতাই বা অন্য কোনো অপরাধের অভিযোগ থাকলেও কাউকে গণপিটুনি দেওয়া নিজেই একটি অপরাধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। একইভাবে ১৪৯ ধারায় উল্লেখ আছে—অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে একাধিক ব্যক্তির সমাবেশ বেআইনি সমাবেশ হিসেবে গণ্য হয় এবং দায় সবার ওপর বর্তায়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানাচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে অপরাধ সন্দেহে গণপিটুনির প্রবণতা বাড়ছে। তাঁদের মতে, অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা উচিত। কারণ গণপিটুনি শুধু ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করে না, বরং আইনি প্রক্রিয়াকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বিশ্লেষকদের মতে, জনগণের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থার ঘাটতি এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার সংস্কৃতিই গণপিটুনির মতো ঘটনা বাড়াচ্ছে। অপরাধ দমনে দ্রুত বিচার নিশ্চিত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে।