
বিশেষ প্রতিনিধি: মোঃ আসাদুজ্জামান
ডেঙ্গুর প্রভাব কাটতে না কাটতেই বরগুনায় শীতের শুরুতেই নিউমোনিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার তিন গুণেরও বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে ওষুধ, সরঞ্জাম ও চিকিৎসা সেবায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৫০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেক শিশুকে মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট
হাসপাতালের মজুত থাকা ওষুধ দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা প্রাইভেট ক্লিনিকে করাতে হওয়ায় চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়ছে।
এছাড়া নেবুলাইজার মেশিনের ঘাটতি তীব্র আকার ধারণ করেছে—অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নেবুলাইজার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। নবজাতক চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেশিন নষ্ট থাকায় চিকিৎসা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
বর্ধিত রোগীর চাপ
নিউমোনিয়ার পাশাপাশি অনেক শিশু ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে ভুগছে। গত এক মাস ধরে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন,
“হঠাৎ শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিশুদের শীতকালীন রোগ বাড়ছে। অভিভাবকদের বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে।”
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে সংকট মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে যা জরুরি
নিউমোকোক্কাল ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা সময়মতো দেওয়া
শিশুদের পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা
প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো
নিয়মিত হাত ধোয়া
শীতে শিশুদের উষ্ণ কাপড়ে রাখার পাশাপাশি জনসমাগম এড়ানো
জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া
শীতের শুরুতেই এ পরিস্থিতি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত সংকট সমাধানের আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।