
ডেস্ক রিপোর্ট :
টাক পড়া বা অ্যালোপেসিয়া সাধারণত জেনেটিক ও হরমোনজনিত সমস্যা হিসেবে পরিচিত। তবে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে, কিছু নির্দিষ্ট ধরনের টাক পড়ার সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকির একটি সম্ভাব্য যোগসূত্র থাকতে পারে।
গবেষকদের মতে, টাক পড়া সরাসরি হৃদরোগ সৃষ্টি করে না। তবে টাক পড়া ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার পেছনে একই ধরনের জৈবিক প্রক্রিয়া বা ‘কমন রিস্ক ফ্যাক্টর’ কাজ করতে পারে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে টাক পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (DHT) নামের অ্যান্ড্রোজেন হরমোন। গবেষণায় দেখা গেছে, এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শুধু চুলের ফলিকলেই নয়, রক্তনালী ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত অ্যান্ড্রোজেন হরমোন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ানো ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরির মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাক পড়ার ক্ষেত্রে চুলের ফলিকলের চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ দেখা যায়। একই ধরনের প্রদাহ ধমনিতে চর্বি জমে যাওয়ার (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) অন্যতম কারণ, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের পুরুষ প্যাটার্ন টাক বেশি, তাদের মধ্যে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও মেটাবলিক সিনড্রোমের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। এসব অবস্থাকে হৃদরোগের বড় ঝুঁকিপূর্ণ কারণ হিসেবে ধরা হয়।
সব ধরনের টাক পড়ার সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে—
মাথার মাঝখানে বা তালুতে টাক পড়া
৩৫ বছরের আগেই টাক পড়া শুরু হওয়া
এ ধরনের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে বলে গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
চিকিৎসকদের মতে, টাক পড়াকে শুধু সৌন্দর্যজনিত সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত নয়। বিশেষ করে মধ্যবয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি শরীরের ভেতরে চলমান কোনো হরমোনজনিত বা মেটাবলিক সমস্যার বাহ্যিক লক্ষণ হতে পারে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।