তৎক্ষণিক পদক্ষেপ:
হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে আপনার যা করা উচিত:
তৎক্ষণ চিকিৎসা সহায়তা নিন। বুকে ব্যথা হৃদরোগের একটি লক্ষণ হতে পারে, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাহায্য পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি গাড়ি চালাতে পারেন তবে ৯১১ নম্বরে কল করুন বা নিকটতম জরুরি বিভাগে যান। আপনি যদি গাড়ি চালাতে না পারেন তবে কাউকে আপনাকে নিয়ে যেতে বলুন বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন।
যখন আপনি সাহায্যের অপেক্ষায় থাকেন, তখন শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং আরাম করুন। গভীর শ্বাস নিন এবং আপনার মনকে অন্য কিছুতে স্থির করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি ধূমপান করেন তবে ধূমপান বন্ধ করুন।
আপনার ব্যথার বর্ণনা করতে প্রস্তুত থাকুন। আপনার ডাক্তার বা নার্সকে বলুন যে ব্যথা কখন শুরু হয়েছে, এটি কোথায় অবস্থিত, এটি কেমন লাগছে এবং এটি কিছু দ্বারা উন্নত বা খারাপ হয় কিনা। আপনার অন্য কোনও উপসর্গ আছে কিনা তাও তাদের জানান, যেমন শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা ঘাম হওয়া।
আপনার ডাক্তার বা নার্স আপনাকে পরীক্ষা করবেন এবং পরীক্ষা করবেন। তারা আপনাকে আপনার হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারে এবং তারা একটি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) করতে পারে। ECG হল একটি পরীক্ষা যা আপনার হৃদস্পন্দের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ রেকর্ড করে।
পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে, আপনার ডাক্তার আপনাকে ওষুধ দিতে পারেন বা আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেন। আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে আপনাকে জীবনধারাগত পরিবর্তন করতেও বলা হতে পারে, যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং ধূমপান ত্যাগ করা।
বুকে ব্যথার অনেকগুলি কারণ রয়েছে এবং কিছু কারণ অন্যদের তুলনায় গুরুতর। আপনার বুকে ব্যথা হলে, কারণ নির্ধারণ এবং আপনার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে একজন ডাক্তারকে দেখা গুরুত্বপূর্ণ।
বুকে ব্যথার অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণ আছে, হৃদরোগ থেকে শুরু করে এমনকি পেশীতে টান পর্যন্ত। বুকে ব্যথার কিছু সাধারণ কারণ হল:
হৃদরোগ: এটি বুকে ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে একটি। হৃদরোগের ব্যথা প্রায়শই বুকের বাম দিকে বর্ণনা করা হয়, এবং এটি চাপ, জ্বলন, ভারী বা নির্ষেকের মতো অনুভূত হতে পারে। এটি হাত, চোয়াল, ঘাড় বা পিঠেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হৃদরোগের অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, ঘাম হওয়া এবং মাথা ঘোরা।
অ্যাঞ্জিনা: অ্যাঞ্জিনা হল হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে বুকে ব্যথা হয়। এটি সাধারণত বুকের বাম দিকে ব্যথা, চাপ বা চাপের অনুভূতি হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
পেরিকার্ডাইটিস: পেরিকার্ডাইটিস হল হৃৎপিণ্ডের চারপাশের থলির প্রদাহ। এটি বুকে তীব্র, ছুরিকাঘাতের মতো ব্যথা, যা সাধারণত শ্বাস নেওয়া বা শুয়ে থাকার সময় আরও খারাপ হয়।
নিউমোনিয়া: নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুকে ব্যথা, কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট।
প্লেউরাইটিস: প্লেউরাইটিস হল ফুসফুসের আবরণের প্রদাহ। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুকে তীব্র, ছুরিকাঘাতের মতো ব্যথা, যা সাধারণত শ্বাস নেওয়া বা কাশির সময় আরও খারাপ হয়।
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD): GERD হল এমন একটি অবস্থা যেখানে পেটের অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসে। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুকে জ্বালাপোড়া, বুকে ব্যথা এবং গিলে ফেলতে অসুবিধা।
উদ্বেগ বা আতঙ্কের আক্রমণ: উদ্বেগ বা আতঙ্কের আক্রমণ বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং হৃদস্পন্দন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
পেশীতে টান বা আঘাত: পেশীতে টান বা আঘাত বুকে ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে বুকের পেশীতে।
আপনার যদি বুকে ব্যথা হয় তবে কারণ নির্ণয় এবং চিকিৎসা করার জন্য একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।
গ্যাসের কারণে বুকে ব্যথা বেশ সাধারণ একটি ঘটনা এবং এটিকে অ্যারোফেজিয়া বা বাতাস গিলে ফেলাও বলা হয়। যখন আপনি খুব দ্রুত খান, পানীয় পান করেন বা চিউইং গাম চিবান তখন আপনি অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলেন। এই অতিরিক্ত বাতাস আপনার পাচনতন্ত্রে আটকে যেতে পারে এবং ফোলাভাব, বুকে ব্যথা এবং এমনকি পেটে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
গ্যাসের কারণে বুকে ব্যথা প্রায়ই বুকের কেন্দ্রে বা বাম দিকে তীক্ষ্ণ বা ছুরিকাঘাতের মতো ব্যথা হিসাবে বর্ণনা করা হয়। এটি পেটে ফোলাভাব, গ্যাস এবং বেলচিং এর সাথেও থাকতে পারে। ব্যথা সাধারণত হালকা হয় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে চলে যায়।
বুকে ব্যথা বিভিন্ন অবস্থার একটি সাধারণ লক্ষণ যা হালকা থেকে গুরুতর পর্যন্ত হতে পারে। হৃদরোগ, ফুসফুসের সমস্যা বা পেটের সমস্যার মতো অনেকগুলি গুরুতর চিকিৎসা অবস্থার এটি একটি লক্ষণ হতে পারে। যাইহোক, এটি কম গুরুতর অবস্থার কারণেও হতে পারে যেমন পেশীতে টান বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স।
বুকে ব্যথার কিছু সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
আপনি যদি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণটি নির্ধারণ করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করতে একজন ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করতে সক্ষম হবেন।
বুকে ব্যথার কিছু কম সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:
আপনি যদি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে আপনার একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত। তারা কারণটি নির্ধারণ করতে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা প্রদান করতে সক্ষম হবেন।
বুকে ব্যথার কারণ নির্ধারণ করার সময়, আপনার ডাক্তার আপনার চিকিৎসা ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন এবং একটি শারীরিক পরীক্ষা করবেন। তারা পরীক্ষাও করতে পারে, যেমন ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইকজি) বা এক্স-রে।
আপনার উপসর্গগুলি পর্যবেক্ষণ করুন: ব্যথার ধরন, তীব্রতা, কোথায় ব্যথা হচ্ছে, কতক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে, এবং অন্যান্য কোন উপসর্গ আছে কিনা তা লক্ষ্য রাখুন। এই তথ্যগুলি ডাক্তারকে রোগ নির্ণয় করতে সাহায্য করবে।
ঢিলেঢালা পোশাক পরুন: আপনার বুকে চাপ অনুভব করলে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
ধূমপান করা বন্ধ করুন: যদি আপনি ধূমপান করেন, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করুন। ধূমপান বুকে ব্যথা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কাশি বা গিলে ফেলা বন্ধ করুন: যদি আপনার বুকে ব্যথা হয় তখন কাশি বা গিলে ফেলার চেষ্টা করবেন না কারণ এটি ব্যথা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মনে রাখবেন:
বুকে ব্যথা হওয়ার অনেক কারণ আছে, এবং সব ক্ষেত্রেই এটি হৃদরোগের লক্ষণ নয়। তবে, বুকে ব্যথা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়। যদি আপনার বুকে ব্যথা হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।